মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে কঠোর বিধিনিষেধে বন্ধ রয়েছ দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল। গত ১৪ এপ্রিলেরর পর থেকে পরিবহন শ্রমিকরা দূরপাল্লার পরিবহন খুলে দেওয়াসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সে দাবি না মানায় তারা ঈদের দিন অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
শুক্রবার (১৪ মে) ঈদুল ফিতরের দিন পরিবহন শ্রমিকদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির আওতায় গাবতলীতে ঈদের নামাজের পর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিক নেতারা।
পরিবহন মালিকরা বলছেন, বিধিনিষেধে দূরপালল্লার পরিবহন ছাড়া দোকানপাটসহ সবকিছুই খোলা রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও সবাই ঠিকই বাইরে বের হচ্ছেন। কেনাকাটা করেছে এবং বাড়ি ফিরেছে। সংক্রামণও দিনদিন কমছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিবহন চালানোর দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, করোনার কারণে গত বছর থেকেই ধাপে ধাপে লকডাউন দিয়েছে সরকার। সেজন্য বাস বন্ধ রাখতে হয়েছে মাসের পর মাস। বাস বন্ধ থাকায় আমাদের পরিবহনের লাখ লাখ শ্রমিক এখন খুব কষ্টে দিন যাপন করছে। এ পরিস্থিতিতে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে।
তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যে দোকানপাট, শপিংমল খোলা, কিন্তু পরিবহন বন্ধ বিষয়টা কেমন হলো বলেন? গণপরিবহন বন্ধ থাকায় মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, এমন তো না। সবাই বের হচ্ছেন কেনাকাটাও করেছে এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ফিরেছে। তাছাড়া পরিবহন চলু করলে, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই গাড়ি চালাবো। এর আগেও সরকারের নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালিয়েছি। তাতে করোনার ঝুঁকি মোটামুটি কমই ছিল।
এই শ্রমিক নেতা আরও বলেন, বেশিরভাগ যানবাহন কেনা হয় বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণের মাধ্যমে। ফলে বাসগুলোর বিপরীতে ঋণের বোঝা পরিবহন মালিকদের কাছে করোনা সংক্রমণের ভয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। অনেক পরিবহন মালিক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবহন চালু করা অতি জরুরি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, প্রতিদিন লাখ লাখ যাত্রী গণপরিবহনে সড়ক পথে যাতায়াত করে। করোনা সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনে মালিক-শ্রমিক, কর্মচারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে এক মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তিনি বলেন, লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে, কিন্তু ব্যয় কমেনি। কাউন্টার ভাড়া, গ্যারেজ ভাড়া, স্টাফ বেতন, পার্কিং চার্জ, গাড়ি পাহারা ও পার্টস ড্যামেজ। সব মিলিয়ে দৈনিক প্রতিটি কোম্পানি বড় অংকের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।