মহানগরসহ দৌলতপুরের বাজার এলাকায় পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন দোকানপাটে দেখা মিলছে নিষিদ্ধ পলিথিনের। নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার বন্ধ না হয়ে বরং সম্প্রতি আরো দ্বিগুনহারে ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এহেন পরিস্থিতির জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের নিস্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন পরিবেশবীদসহ সচেতন সমাজ। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পরিচালিত কার্যক্রম অনেকটাই খাতা-কলমে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযানের নিষ্ক্রিয়তার দরুন বর্তমানে পলিথিন নিষিদ্ধের আইনটি অকার্যকর হতে বসেছে।
পরিবেশ আর জীব-বৈচিত্রের জন্য চরম ক্ষতিকর নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধের ব্যাপারে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় একাধিক প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। পলিথিনের অতিমাত্রায় ব্যবহার আর আবর্জনার স্তুপ ধীরে-ধীরে মহানগরসহ দৌলতপুর উপ-শহরটিকে নোংরার রাজ্যে পরিণত করছে।
বারি’র তথ্য মতে, পলিথিন হলো একটি নন-বায়োডিগগ্রেটেবল স্তুপ যা অপচনশীল। পলিথিন অপচনশীল হওয়ার দরুন বছরের পর বছর মাটির নীচে থাকার পরও নষ্ট হয়না। যে কারণে মাটির নীচের জীব-বৈচিত্র প্রাণ নাশের হুমকির মুখে পতিতসহ মাটি তার উর্বরতা হারাচ্ছে। আইনে পলিথিনের ব্যবহার, উৎপাদন, মুজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সরেজমিনে, পলিথিনের মজুদ, সরবরাহ, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও মহানগরসহ দৌলতপুর বাজারে মাছ, মাংস, মুদি দোকান, সবজির বাজার, অলি-গলিসহ বিভিন্ন স্থানে দেদারছে দেখা মিলছে। দৌলতপুরের আশপাশের অঞ্চলে আগত ব্যবসায়ীরা বাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে নির্বিঘ্নে কিনছে পলিথিন।
আড়ংঘাটা হতে আসা আসা ক্রেতা রহিম জানান, পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ জানা সত্ত্বেও কমছে না পলিথিনের ব্যবহার। তবু সকলে পলিথিন ব্যবহার করে মালামাল বহনে ঝামেলা কম তাই।
পলিথিন বন্ধ ও নিষিদ্ধের ব্যাপারে ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, পলিথিন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণহারে পলিথিন ব্যবহার চলছে। যা আমাদের পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতি। সকলকে পলিথিনের বিকল্প ব্যবহার করার মানষিকতা তৈরি করা উচিত বলে আমি মনে করি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিনে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন অর রশিদ জানান, পলিথিন হলো একটি নন-বায়োডিগগ্রেটেবল বস্তু যা সহজে পচনশীল নয়। পলিথিন মাটির সঙ্গে মিশে অবিকৃত থাকার দরুন মাটিতে যে পচনশীল ব্যাকটেরিয়া থাকে তা বাধাগ্রস্ত হয় এবং মাটিতে পচনশীল কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়া পানি নিষ্কাষনে পলিথিন চরম ক্ষতি সাধিত করে। এ থেকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। যা ভূ-গর্ভস্থ পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে পাশাপাশি ভূ-গর্ভস্থ জীব ও বিচিত্রকে হুমকির মুখে ফেলে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান খান বলেন, পলিথিনের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে জন্য মারাত্মক ক্ষতির।
তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন এই দপ্তরে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য কোন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেই। তাছাড়া খুলনায় করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ভ্রাম্যমান অভিযান বন্ধ আছে। তবে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন দ্রুতই জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেডের মাধ্যমে পলিথিন উৎখাতের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।