শেখ মাহতাব হোসেন :: ডুমুরিয়া (খুলনা) পাকা ঘর ও একখন্ড জমি পেয়ে জীবন বদলে গেছে ডুমুরিয়ার সহায় সম্বলনহীন ভূমিহীন ৮০৫ পরিবারের । নুতন করে আরো ঘর পাচ্ছে ২ শতাধিক পরিবার। যা প্রধান মন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
সারা জীবনের চেষ্টায় যারা মাথা গোজার মত এক টুকরো ভূমি সংগ্রহ করতে পারে তারা স্বপ্ন দেখছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যানে এটা সম্ভব হয়েছে।
জানা গেছে সহায় সম্বলমহীন মানুষগুলো মাথা গুজার ঠাই পেয়ে অনেকে বেশ স্বাবলম্বী। ঘরের পাশেই তারা গড়ে তুলেছে, সবজির মাচা, গরু-ছাগল পালনের জন্য করেছে গোয়াল ঘর। খালি জমিতে বেগুন, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজির বাগান।
উপজেলার কাঠালতলা, চুকনগর বাজার এলাকায়, বরুনা, খাজুরা থুকড়া, শেয়ারঘাটা, আমভিটা, বাহাদুরপুর, বয়ারসিং, আশ্রয়ণের সারি সারি ঘর, যা দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এখানে গড়ে উঠেছে ভূমিহীনদের বসতি, সবুজের সমাহার।
ঘরের বাসিন্দারা নারী পুরুষ জীবিকার সন্ধানে ছুটছে। অনেক নারীদের কেউ কেউ ব্যস্ত হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগলের কাজ নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তোলাছে সবজি বাগান।
কাঠালতলা বাজারের পাশে ভদ্রার নদী কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই পল্লীতে শতাধিক ঘর সহ উপজেলায় ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের শান্তির নিবাসের বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৮০৫ শতাধিক । এ সকল আশ্রয়ণে তাদের জীবনের শুরুটা ভূমিহীন হলেও এখন তারা আর ভূমিহীন নয়। মুজিববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীনদের বসবাসের জন্য শুধু ঘর নয় সরকারি ২ শতক জমিও প্রদান করেন।
এ ছাড়া শিক্ষার ছোঁয়াও লেগেছে তাদের মধ্যে। আশ্রয়ণে বসবাসরত ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশে পাশে রযেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান। ফলে এ আশ্রয়ণে শিক্ষার প্রভাবও পড়েছে। এতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ছেলে মেয়েরা শিক্ষারও সুযোগ পাচ্ছে।
সরেজমিনে আশ্রয়নে গিয়ে দেখা যায়, ছোট পরিসরে আদর্শ ছিমছাম সারি সারি ঘর। ঘরের বাসিন্দারা ভ্যান চালক, দিন মজুর । ভবিষ্যতের জন্য সবাই মিলে সঞ্চয় করছেন। অনেকে নিজেদের সুবিধামতো ঘরের সঙ্গে পাওয়া জমিতে নানা ধরণের ফুল ও ফলের গাছ রোপন করেছেন।
কাঠালতলা আশ্রয়নের বাসিন্দা রিনা পারভীন বলেন, ‘আগে আমরা অন্যের জায়গায় ছোট ভাঙা ঘরে থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে শীত-বৃষ্টি মৌসুমে লড়াই করে অনেক কষ্টে জীবনযাপন করতাম।
সরকার আমাদের নতুন ঘর দেয়ায় এখন আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছি। আগের মতো কষ্ট আর নেই।’
বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান জানান, ইতোমধ্যে যারা ঘর পেয়েছেন তারা স্বাচ্ছন্দে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনযাবন করছেন। এ ছাড়াও করোনাকালে এ সকল দরিদ্র মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে কোনো ভূমিহীন, গৃহহীন যেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না।
এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আশ্রয়ণে- ২ প্রকল্পের ২ শতাধিক নির্মানের ঘর তালিকা প্রস্তুত করা হযেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ মার্চ উপহারের গৃহনির্মাণ উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও জানান, তাদেরকে স্বাবলম্বী করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসছে।