বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশি’ হিসেবেই বিবেচনা করছে সৌদি সরকার। বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আল-দুহাইলান গতকাল রবিবার ঢাকার একটি হোটেলে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে বিবেচনা করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে গেছে।’
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব এরই মধ্যে বাংলাদেশকে ৫৫ হাজার জনের তালিকা দিয়েছে। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া ওই ব্যক্তিদের পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে বা হারিয়ে গেছে। কেবল তাদের পাসপোর্ট নবায়ন বা আবারও ইস্যু করা প্রয়োজন। তাদের বিষয়টি দেখভালের জন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়ে কাজ করছেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত আরো জানান, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ মাসেই সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের কথা ছিল।
এদিকে ওই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেছেন, সৌদি আরবে কোনো বাংলাদেশির পাসপোর্ট না থাকলে তাকে অবশ্যই পাসপোর্ট দেওয়া হবে। বাংলাদেশি পরিচয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করলে তা বিবেচনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘যারা মিয়ানমারের, তারা বাংলাদেশি নাগরিক নয়। তারা মিয়ানমারের নাগরিক, এটি স্পষ্ট।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছরের পুরনো। অতীতে সৌদি আরব রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ছিল। রোহিঙ্গারা সৌদি আরবের একটি শহরের নির্দিষ্ট এলাকায় থাকে।
২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন উদ্যোগে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সৌদি আরবকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আশা করেন, সৌদি এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
অনুষ্ঠানে দরিদ্র রোহিঙ্গাদের জন্য সৌদি বাহশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পাঠানো ৩০ হাজার ঝুড়ি খাবার হস্তান্তর করা হয়। বাহশাহ সালমান হিউম্যানিটারিয়ান অ্যান্ড রিলিফ সেন্টার এসব খাবারের ঝুড়ি পৌঁছে দিয়েছে।