মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (শনিবার) সকালে ৬৬ হাজার একশ ৮৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের হাতে জমিসহ ঘর তুলে দেন। এরমধ্যে খুলনা বিভাগে তিন হাজার দুইশত পঁচিশ পরিবার এবং জেলায় নয়শত বাইশ পরিবার পেলেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেসিং এর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ৬৪ জেলায় ৪৯২ উপজেলায় একযোগে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ভূমিহীন-গৃহহীন এসকল পরিবারের কাছে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
উপকারভোগী পরিবারের প্রত্যেককে দুই শতক সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা একক ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুজিববর্ষে ২১টি উপজেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪টি প্রকল্পগ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণের মাধ্যমে ৩৭১৫টি পরিবারকে পূনর্বাসন করা হয়েছে। একক গৃহ ও ব্যারাকের মাধ্যমে একসাথে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদানের ঘটনা বিশে^ এটিই প্রথম। সারা বাংলাদেশে কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া মাত্র তিন মাসে উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে এই ঘরগুলো নির্মাণ সম্পন্ন হয়। আগামী একমাসের মধ্যে আরও এক লক্ষ ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কাঠালপাড়া গ্রামে একশত চল্লিশ জন উপকারভোগীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেএমপি কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, খুলনা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, এডিসি (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, ডুমুরিয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল ওয়াদুদ ডুমুরিয়া প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
উল্লেখ্য, খুলনার ৯২২টি পরিবারের মধ্যে তেরখাদা ৪০টি, দিঘলিয়া ৭০টি, ডুমুরিয়া ১৪০টি, ফুলতলা ৪০টি, রূপসা ৭২টি, পাইকগাছা ২২০টি, বটিয়াঘাটা ১৫০টি, কয়রা ৫০টি, দাকোপ ১৪০টি পরিবার জমি ও ঘর পেয়েছেন। এই ৯২২ পরিবারের প্রধানদের মধ্যে ৫৭০জন দিন মজুর, ৩২ জন শ্রমিক, ০৩ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ২০১ জন কৃষক, ৫৮জন গৃহিনী, ০৪ জন প্রতিবন্ধী, ২৮ জন ভ্যানচালক, ১২ জন ভিক্ষুক এবং অন্যান্য ১৪ জন।