খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের প্রাক্তন সদস্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারীর অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা রোববার (১০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২.৩০ মিনিটে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী।
প্রধান অতিথি বলেন, যে শিক্ষা মানুষকে বিনয়ী করে, যে শিক্ষা মানুষকে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তোলে সেটাই প্রকৃত শিক্ষা। যে জীবনবোধ একটি মানুষকে ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ করে, যে জীবনবোধ সম্পূর্ণ করে, সেটিই তো শিক্ষা, সেটিই তো শিক্ষকের কাজ। সেই শিক্ষক তিনিই, যিনি সব শিক্ষার্থীর সমস্ত হৃদয়ে পৌঁছে যান, তাঁকে অধিকার করেন। প্রত্যেককে শাসনে নয়, স্নিগ্ধ কর্তৃত্ব যেখানে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে। প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী তেমনই একটি ধারণা ও আদর্শের প্রতীক। তিনি শুধু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, গোটা বাংলাদেশের সম্পদ। শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদেরও উচিত তাঁকে অনুসরণ করা। তাঁর আদর্শ ধারণ করেই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিদায়ী শিক্ষক প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি আমার অনেক ঋণ। আমি যতক্ষণ জীবিত আছি, এই দেশের মানুষের কাছে যতঋণ আছে সব শোধ করে যাওয়ার চেষ্টা করবো। কাজ থেকে অফিসিয়ালি অবসর নিলেও একাডেমিক জগতে যাতে বিচরণ করতে পারলে নিজেদের অনেক বিষয় শেয়ার করতে পারবো। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের দেশকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেখার সুযোগ হয়েছিলো। সেখান থেকে আমার নতুন করে জন্ম হয়েছে। আমাদের সকলের একই শেকড় রয়েছে, তাহলো বাঙালি সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি ধারণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক জাতি গঠনে সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে।
ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস ও সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. ইয়াছিন আলী। এসময় শিক্ষকদের মধ্য থেকে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশীর আহমেদ, প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মো. সারওয়ার জাহান, প্রফেসর ড. মো. ইয়ামিন কবীর, প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র সরকার, প্রফেসর ড. দেবেশ দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মাহতালাত আহমেদ।
শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন মো. আসাদুর রহমান ও মেঘনা খাতুন, কর্মচারীদের পক্ষে নিবারণ কুমার রায়। অনুষ্ঠানে ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মানপত্র পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র সরকার। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মানপত্র পাঠ করেন আমানী রশীদ ইরাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার ও শ্যামলী নন্দী।
এর আগে বিদায়ী শিক্ষককে ডিসিপ্লিনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট, ফুল ও শুভেচ্ছা উপহার দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়া ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষকের বর্ণাঢ্য জীবনের দিক তুলে ধরে একটি বায়োগ্রাফি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রধান, সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।