চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃফরিদপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন কাজে খুঁটি প্রতিস্থাপনের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অফিস ম্যানেজার কথা বলে একাজ করছে। এ ঘটনায় তারা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তাদের নাম ভাঙিয়ে কেউ এ ঘটনা ঘটালে এ দায় তারা নেবেন না।
ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পসহ মোট পাঁচটি প্রকল্পে জেলায় পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ হাজার ৫৯ কিলোমিটার এই লাইন সম্প্রসারণ ও খুঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। এর মধ্যে দুইটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বোয়ালমারী উপজেলার চিতার বাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ইউআরআইডিএস প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে মেসার্স মির্জা আবু বকর নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
চিতারপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোহসিন মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে টানানো তার সরানোর জন্য ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক ও ফোর ম্যান আল আমীন। টাকা না দেওয়ায় খুঁটির কাজ করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে লাইনের তার কেটে ঝুলিয়ে রেখে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়। এতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি পাটের গুদামে আগুন লেগে দোকান ঘরসহ ভাড়াটিয়াদের প্রায় এক কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়।
ফরিদপুরের ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এবিএম মমতাজউদ্দিন চিতার বাজারের অগ্নিকাণ্ডের প্রদত্ত প্রতিবেদনেও উল্লেখ করেন, ‘ঠিকাদারের কাজের সময় অসতর্কতার কারণে তার ছেড়া অবস্থায় ছিল, পরে লাইন দিলে আগুন লাগে।
চিতার বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামালউদ্দিন বলেন, ঘুষের টাকা না দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই এ আগুন লাগিয়েছে তারা। তিনি বলেন, ওই বাজারের রাকিবুল ইসলাম বতু, আমিন বিশ্বাস, বাবুল বিশ্বাসসহ অনেকের কাছের কাছ থেকে এই চক্রটি বিদ্যুতের পিলার স্থাপনের কথা বলে টাকা নিয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট ঘটনার সঠিক তদন্ত করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিখিত অভিযোগ করার প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।
চিতার বাজার বণিক সমিতির সহসভাপতি আতাউর রহমান বলেন, পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের নামে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করা হয়। নইলে ইচ্ছামতো বিদ্যুৎ পিলার স্থাপন করে। এ ব্যাপারে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এমনটি যে হচ্ছে না তা নয়। তবে এর সঙ্গে স্থানীয় লোকেরাই বেশি জড়িত। তারা আমাদের সাইনবোর্ড করে এভাবে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, চিতার বাজারের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সপ্তাহখানের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারবো বলে আশা করছি।