চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল মুকিম সরকার বলেন, বোর্ড মিটিংয়ে ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পে খেলাপী বরাদ্দ গ্রহীতাদের উপর আরোপিত জরিমানা শতকরা ৩ ভাগ ও শতকরা ২ ভাগ সারচার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্ল¬ট গ্রহীতারা চলতি মাসের ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বকেয়া টাকা পরিশোধ করলে ফেব্র“য়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্ল¬ট বুঝে দেয়া হবে।
গতকাল শনিবার দুপুরে সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতাসহ নানা কারণে প্রকল্প অনুমোদন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কিন্তু তিনি যোগদানের পর থেকে সকল সমস্যা উত্তরণ ঘটিয়ে প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদন ও চলতি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে প্রতিটি প্রকল্পই গতি ফিরে পেয়েছে।
তিনি বলেন, ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) বরাদ্দকৃত জমির বরাদ্দের অর্থ পরিশোধ করা সংক্রান্ত বিষয়টি দীর্ঘ ১০ বছর যাবত ঝুলে ছিল। বকেয়া অর্থের জরিমানা মওকুফ করে জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সাথে সমন্বয় করে খুলনার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে।
বাড়ির প্ল¬ান অনুমোদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, মাস্টারপ্ল¬ানে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ২০ ফুট সড়ক নিশ্চিত করে বাড়ির প্ল¬ান অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। তবে বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। পরিস্থিতি বুঝে ১২ ফুট সড়কেও ৫ তলা ভবনের প্ল¬ান অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সোনাডাঙ্গা বাইপাস ও শহিদ শেখ আবু নাসের বাইপাস সড়ক দু’টি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই তারা এখন ওই দু’টি সড়ক মেরামত করবে।
অননুমোদিত প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনশ’ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মহানগরীর ফুলবাড়ীগেট রেল ক্রসিংয়ে ওভারপাস নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করেছে কেডিএ। ইতোমধ্যে ওই প্রকল্পের আওতায় ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হয়েছে। ১৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর কবীর বটতলায় দেড় একর জায়গার উপর শেখ রাসেল কনভেশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা টার্মিনালটি আধুনিকায়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে ডিপিপি প্রস্তুতির কাজ চলছে। তবে এখানের চাপ কমাতে ও ভবিষ্যতে চাহিদার প্রেক্ষিতে পরিবহনের জন্য উত্তরণের মোড়ে আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণে পরিকল্পনা রয়েছে। ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মুজগুন্নী শিশু পার্ক সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এছাড়া মুজগুন্নী পার্কের পাশে কেডিএ’র জায়গায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে জিমনেসিয়াম ও সুইমিংপুল নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে।
চলতি প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে সরকারি অর্থায়নে ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। বর্তমান ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সংশোধিত ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। একনেকে অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। ময়ূরী প্রকল্পের শতকরা ৭২ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। এখন বোর্ড মিটিংয়ে ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পের খেলাপী প্ল¬ট বরাদ্দ গ্রহীতাদের জরিমানা সারচার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই প্লট গ্রহীতারা চলতি মাসের ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বকেয়া টাকা পরিশোধ করলে ফেব্র“য়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্লট বুঝে দেয়া হবে।
কেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, খুলনা নিরালা থেকে সিটি বাইপাস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়ের মহল এবং দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তহারা পর্যন্ত তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণে মাঠ পর্যায়ে জমি অধিগ্রহণে কাজ চলছে। জমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হলে প্রথমে দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তহারা পর্যন্ত সড়কটি আগে নির্মাণ করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে কেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, খুলনা নিরালা থেকে সিটি বাইপাস সড়কে লে-আউট পরিবর্তনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
সভায় উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু, দৈনিক সময়ের খবর’র সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, দেশ সংযোগ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম সোহাগ, দৈনিক তথ্য’র সম্পাদক হাবিবুর রহমান ও চীফ রিপোর্টার হাসান আহমদ মোল্লা, দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন’র সম্পাদক এস এম সাহিদ হোসেন, দৈনিক জন্মভূমির স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনিস উদ্দিন, দৈনিক প্রবাহের রিপোর্টার মাকসুদ আলী, দৈনিক সময়ের খবরের নিজস্ব প্রতিবেদক এস এম আমিনুল ইসলাম, কেডিএ’র সচিব লস্কর তাজুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী কাজী সাবিরুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শামিম জেহাদ, সিনিয়র বৈষয়িক কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান, অথরাইজড অফিসার মুজিবর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরমান হোসেন ও মোরতোজা আল মামুন, প্রকৌশলী মুনতাসির মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।