র্যাব পরিচয়ে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ির গতিরোধ করে দুই ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। পরে পুলিশ এক র্যাব সদস্যসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ওসি নুরে আযম।
ওসি জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা করেছেন। মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মমিন নামে এক র্যাব সদস্য রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মধ্যরাতে ভু্ক্তভোগীরা বিমানবন্দর এলাকা থেকে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে একটি গাড়ি তাদের পিছু নেয় এবং মহাখালী ফ্লাইওভারের উপরে উঠলে পেছনে থাকা গাড়িটি সামনে গিয়ে গতিরোধ করে। এসময় তাদের পিস্তল দেখিয়ে গাড়ি থেকে নামানো হয় এবং হাতে হ্যান্ডকাপ পরানো হয়। ওই সময় ভুক্তভোগীরা চিৎকার শুরু করলে অনেকেই সড়ক ধরে চলে গেলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তবে ওই পথ ধরে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এক সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্য যাচ্ছিলেন। তারা এমন দৃশ্য দেখে থেমে যান এবং র্যাবের জ্যাকেট পরিহিত সদস্যদের এমন কাণ্ড দেখে তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করেন।
বনানী থানার একজন পুলিশ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী রিয়াজ ও শহীদুলের বরাত দিয়ে জানান, ভুক্তভোগী দুজন বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেটকার নিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়ি তাদের ফলো করে এবং ঘটনাস্থলে গাড়ি থামিয়ে মারধর শুরু করে। পুরো গাড়ি চেক করবেন বলে জানান। এসময় তাদের গুলি করে মেরে ফেলবেন বলেও তারা হুমকি দেন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, তাদের এমন দৃশ্য দেখে পাশ দিয়ে যাওয়া একজন সাংবাদিক ও পুলিশ সেই অপহরণকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা পরিচয়পত্র দেখান। কিন্তু সেই পরিচয়পত্র ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করেন এবং বিষয়টি জানান। ওই সময় র্যাবের জ্যাকেট পরিহিত ব্যক্তিরা তাকেও গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। তবে তারা বাধা দিলে ওই ব্যক্তিরা সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। এসময় একজনকে জনতা ধরে ফেলে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তির নাম জয়। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে। তিনি টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে ফোন করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।