বলিউডে অকালে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। এবার কলকাতার যোধপুর পার্কের নিজ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হলো ডার্টি পিকচার-খ্যাত অভিনেত্রী আরিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্তাক্ত মরদেহ।
হিন্দুস্তান টাইমস, এই সময়, আনন্দবাজারসহ ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে শেষবার তাকে বারান্দায় দেখা যায়। সকাল ১০টা নাগাদ পরিচারিকা এসে ডাকাডাকি করেও তার সাড়া পাননি। সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীদের খবর দেন তিনি। পরে পুলিশ এসে অভিনেত্রী আরিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, যোধপুর পার্কের একটি বহুতল ভবনের তিন তলার ফ্ল্যাটের বিছানায় তার দেহ পড়েছিল। নাকে ছিল রক্তের দাগ। ঘরের দরজা বন্ধ ছিল ভিতর থেকে। বমি লেগেছিল মুখে ও নাকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কোনোকিছু অতিরিক্ত মাত্রায় খেয়ে ফেলার জন্য তার মৃত্যু হতে পারে। আরিয়া নেশাগ্রস্ত ছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশকে ওই পরিচারিকা জানান, আরিয়া খুব একটা কথাবার্তা বলতেন না। বাড়িতে একটা কুকুর রয়েছে। তাকে নিয়েই কাটাতেন। ঘরেও বেশি লোকের যাতায়াত ছিল না। বৃহস্পতিবারও কথা হয়েছে ফোনে।
আরিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবেশী আদিত্য চক্রবর্তী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ছন্নছাড়া একটা জীবনযাপন করছিলেন আরিয়া। পাড়ার লোকজনের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করতেন। দেখাও যেত না ওকে। ওর এভাবে মৃত্যুর খরবটা অবশ্যই বেদনাদায়ক, কিন্তু একেবারেই যে অপ্রত্যাশিত, তা নয়।
আরিয়ার পরিচারিকা চন্দনা দাস বলেন, সকাল থেকে বেশ কয়েকবার ফোন করি। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। বেল বাজিয়েও কোনো সাড়া পাইনি। পুলিশ এসে দরজা খোলার পর দেখলাম, মুখ থুবড়ে উল্টে পড়ে রয়েছে। রক্ত ছড়িয়ে রয়েছে মেঝেতে।
শরীরে রক্ত থাকলেও আঘাতের কোনো চিহ্ন মেলেনি। পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে বিষয়টি জানাবে।
আরিয়া প্রখ্যাত সেতারবাদক পণ্ডিত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে। আরিয়ার জন্ম কলকাতাতেই। তার আসল নাম দেবদত্তা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরে আরিয়া নামেই পরিচিতি পান। স্নাতকোত্তর শিক্ষা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে।
মুম্বাইয়ে অনুপম খেরের অভিনয় স্কুল থেকে অভিনয় শেখেন তিনি। বলিউডে তার প্রথম সিনেমা দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের‘লাভ সেক্স অউর ধোকা’ (২০১০) এবং পরের বছরই তিনি অভিনয় করেন বিদ্যা বালান অভিনীত ‘দ্য ডার্টি পিকচার’–এ। এরপর তাকে আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি।