‘গণতন্ত্রহীনতা ও বিচারহীনতার কারণেই আজকে দেশে সর্বক্ষেত্রে মহাবিপর্যয়। বর্তমান সরকার দেশের জন্য একটি বিপর্যয়’! এই মন্তব্য করেছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের বীর সংগঠক ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি আজ শুক্রবার কুমিল্লার দাউদকান্দি সদরে তাঁর বাসভবনে দাউদকান্দি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
ড. মোশাররফ মতবিনিময় সভায় দাউদকান্দি পৌর মেয়র প্রার্থী নূর মো. সেলিম সরকার ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিপুলভোটে বিজয়ী করতে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বন জানান।
ড. মোশাররফ বলেন, সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণসহ সর্বক্ষেত্রে চরমভাবে ব্যর্থ। তাদের অদূরদর্শিতায় করোনা ভ্যাকসিন নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। করোনার এই বিপদকালেও সরকারি দলের লোকদের কুকর্মের কারণে দেশের মানুষ অশান্তিতে কাল কাটাচ্ছে। এই বিপর্যয় থেকে দেশ বাঁচাতে গণতান্ত্রিক সরকারের কোনো বিকল্প নেই। আর এই লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধ্য করতে হবে।
বর্তমান সরকারকে অনৈতিক, অবৈধ ও গায়ের জোরের সরকার অভিহিত করে ড. মোশাররফ বলেন, এমন একটি সময়ে আমরা পৌরসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হচ্ছি, যখন দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলছে আওয়ামী দুর্যোগ ও করোনা আগ্রাসন। আওয়ামী দুর্যোগ- এ জন্য বলছি, যারা সরকারে আছেন তারা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতেই ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নস্যাৎ করেছে। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। ৩০ তারিখ যদি মানুষ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেতো, তাহলে বিএনপি ৮০ ভাগ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করতো।
বিএনপি’র নীতিনির্ধারক এই নেতা বলেন, বর্তমানে দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঢাকা দক্ষিণের বর্তমান মেয়র সাবেক মেয়রকে প্রকাশ্যে চোর সম্বোধন করছে, আবার সাবেক মেয়র বর্তমান মেয়রকে চোর বলছে! মামলা হয়েছে। সরকার নিরব ভূমিকায়। দেশের মানুষ আজ কোথায় আছে? দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু থাকায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। মানুষের ভোটাধিকার নেই। তারা সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের পুলিশকে দলীয় ক্যাডার বাহিনীতে পরিণত করেছে। সরকার ক্ষমতায় বসে যা ইচ্ছে তাই করছে। কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ কারো কথা শুনছে না। এইভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল, তা আজ সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। জনগণ যখনই ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, বিপুল ভোটে বিএনপিকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে।
মতবিনিময় সভায় পৌর বিএনপি’র সভাপতি ও মেয়র প্রার্থী নূর মো. সেলিম সরকার সভাপতিত্ব করেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা মো.আক্তারুজ্জামান সরকার, একেএম শামছুল হক, মো. সাইফুল আলম ভূঁইয়া, জসিমউদ্দিন আহমেদ, ভিপি জাহাঙ্গীর আলম, মাহবুবুল হক হিরণ, কাউন্সিলর মোস্তাক মিয়া, খন্দকার বিল্লাল হোসেন (সুমন কাউন্সিলর), শরীফ চৌধুরী ও রোমান খন্দকার প্রমূখ।