প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরালো হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ। অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ তেমন গুরুত্ব পায় না। তবে জো বাইডেনের সম্ভাব্য নীতিগুলোর সুফল বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিরা পেতে পারেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এর সুফল পাবে। বাইডেন প্রশাসন বিশ্ব ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারলে বাংলাদেশও তা থেকে উপকৃত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির কালের কণ্ঠকে বলেন, বাইডেনের তুলনামূলক উদার ও মানবিক অভিবাসননীতিতে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অনিয়মিত’ বাংলাদেশিরা ‘নিয়মিত’ অভিবাসী হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্প প্রশাসনের চেয়ে সোচ্চার হবে এবং এ সংকটের কার্যকর সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলেও বিভিন্ন মহলে আশা আছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সরকারিভাবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার প্রত্যাশা জানাতে পারে। তবে বিষয়টি খুব সহজ না-ও হতে পারে।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারও বলেছেন, সম্পর্ক আরো জোরালো হওয়া ছাড়া আর কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না। তবে নতুন প্রশাসন কেমন নীতি গ্রহণ করবে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। তিনি বলেন, বাইডেনের মন্ত্রিসভায় পরিচিত অনেকেই জায়গা পেতে চলেছেন। তাঁদের অনেকেরই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় সত্যিকারের মনোযোগ রয়েছে।
বাইডেন প্রশাসন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) এগিয়ে নেবে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমার তেমনটাই মনে হয়। এটা কোন নামে ডাকা হচ্ছে, কিভাবে পুনরায় ব্র্যান্ডিং করা হবে—সেসব কোনো বিষয় না। যুক্তরাষ্ট্রের নজর থাকবে এই অঞ্চলে শক্তিশালী হওয়ার।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইড্রো উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ সহযোগী মাইকেল কুগেলম্যান কালের কণ্ঠকে বলেছেন, ‘বাইডেন প্রশাসনের কাছেও বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব পাবে না। তবে বাইডেন প্রশাসন অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টি থাকবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কালের কণ্ঠকে বলেন, বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরালে বাংলাদেশ পরোক্ষভাবে এর সুফল পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারিত হতে পারে।