বাজার ধরতে এবার কার্যত সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে ভারতের দুই করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারক। নাম উল্লেখ না করে কোভ্যাকসিনকে যে কটাক্ষ ছুড়েছিল সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই), তার পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারত বায়োটেক।
সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষ্ণা এল্লা দাবি করেন, কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ধামাচাপা দিতে স্বেচ্ছাসেবকদের প্যারাসিটামল দিয়েছে অ্যাস্ট্রোজেনেকা। ভ্যাকসিনটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা। ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম।
কোভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর থেকেই ভারতীয় ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পর্যাপ্ত তথ্য ছাড়াই অনুমোদন পেয়েছে কোভ্যাকসিন, যা শেষ পর্যন্ত হিতে বিপরীত হতে পারে। সেই রেশ ধরে এনডিটিভিকে সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা দাবি করেন, সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাসের মাত্র তিনটি ভ্যাকসিন— অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোজেনেকা, ফাইজার এবং মর্ডানার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। বাকি কোনো টিকার কার্যকারিতা সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ নেই, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত, রাশিয়া, ইউরোপসহ বাকি সব ভ্যাকসিন ‘পানির মতো নিরাপদ’। সেগুলোর কার্যকারিতা এখনো প্রমাণিত হয়নি বলে দাবি করেন সেরামের সিইও।
কারো নাম না করলেও তিনি যে ভারত বায়োটেক নিয়েই এ মন্তব্য করেছেন, তা একেবারেই স্পষ্ট। সেরামের সেই কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারত বায়োটেক।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে এল্লা বলেন, ‘ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নিশানা করা সহজ। এটা আমায় বলতে হচ্ছে, কারণ অন্য একটি সংস্থা (সেরাম) আমার ভ্যাকসিনকে পানির মতো নিরাপদ বলেছে। সংবাদমাধ্যমে একটি স্থানীয় সংস্থা জানিয়েছে, অন্য সংস্থার সুরক্ষা হলো পানির মতো নিরাপদ। আমি সেটা খারিজ করছি। বিজ্ঞানী হিসেবে এরকম মন্তব্য কষ্টজনক। আমরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করি এবং মানুষের পক্ষ থেকে এরকম সমালোচনার যোগ্য নই। ’
তবে, এখানেই শেষ হয়নি কাদা ছোড়াছুড়ি। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ফলাফল নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রোজেনেকার ক্নিনিক্যাল ট্রায়াল নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন। ৬০ শতাংশ, ৭০ শতাংশ নাকি ৯০ শতাংশ— ট্রায়ালের কার্যকারিতা কতটা? কেউ জানেন না। যদি আমরা ভারতে ওরকম ট্রায়াল চালাতাম, তাহলে গুণমানের ভিত্তিতে সংস্থা বন্ধ করে দিতো ড্রাগস কন্ট্রোলার অব ইন্ডিয়া। ’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘কোভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশেরও কম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, যা অন্যদের ক্ষেত্রে তা ৬০-৭০ শতাংশ। আমি আশ্বস্ত করতে পারি যে আমাদের টিকা ২০০ শতাংশ সুরক্ষিত। ’