বাগেরহাটে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত ভবনে প্রথমে জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হককে টিকা প্রদান করেন সিনিয়র ষ্টাফ নার্স শাশীম আরা খানম।
এরপরেই পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়কে টিকা দেন সিনিয়র ষ্টাফ নার্স নাজমা খানম। ডিসি, এসপির পরে টিকা নেন সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির। এরপর একে একে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)-র যুগ্ন পরিচালক শরীফ উদ্দিন আহমেদ, মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. শাহ-ই-আলম বাচ্চু, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীব কুমার বকসি, জনপ্রতিনিধি আফরোজা খানম গনমাধ্যমকর্মী বিষ্ণ প্রসাদ চক্রবর্তী, আলী আকবর টুটুলসহ অনেকেই টিকা গ্রহণ করেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতালে টিকা কার্যক্রম চলবে। প্রথম দিনে ১৫০ জনকে টিকা দেওয়া হবে বলে জানান সিভিল সার্জন।
এর আগে ফিতা কেটে এই টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হক। এসময় পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়, সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব প্রসাদ পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খন্দোকার মোহাম্মাদ রিজাউল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ শাহিনুজ্জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি মুশফিকুর রহমান, বাগেরহাট বিএমএ-র সাধারণ সম্পাদক ডা. মোশাররফ হোসেনসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
টিকা গ্রহণ শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আনম ফয়জুল হক বলেন, আপনারা জানেন সারা দেশে এক সাথে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। আমরা বাগেরহাট জেলায়ও টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছি। টিকা গ্রহণ শেষে আমি সম্পুর্ণ সুস্থ রয়েছি। কোন প্রকার শারীরিক সমস্যা হয়নি। আমি বাগেরহাটবাসীকে অনুরোধ করব রেজিষ্ট্রেশন করে ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
টিকা গ্রহণ শেষে গণমাধ্যমকর্মী আলী আকবর টুটুল বলেন, একজন গনমাধ্যমকর্মী হিসেবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পেশাগত কাজে মাঠে ছিলাম। এখনও আছি। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আমি শনিবার বিকেলে নিবন্ধন করেছি। রাতে ম্যাসেজ পেয়েছি, সকালে সদর হাসপাতালে গিয়ে টিকা গ্রহণ করেছি।আমি সম্পুর্ণ সুস্থ আছি, কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত নেই।
বাগেরহাটের প্রথম নারী হিসেবে টিকা গ্রহণ করেন বাগেরহাট জেলা পরিষদের সদস্য আফরোজা খানম। তিনি বলেন, আমি প্রস্তুতি নিয়ে চেয়ারে বসলাম। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেবিকাগণ আমাকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন করলেন। আমি টের-ই পাইনি যে আমাকে টিকা দেওয়া হয়েছে। অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় যে আমরা টিকা পেয়েছি, এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। সকল নারীদেরকে নিবন্ধন সম্পুর্ণ করে সময়মত টিকা গ্রহণ করার আহবান জানান তিনি।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন। আমি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়সহ জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা টিকা গ্রহণ করেছি। সবার উচিত নির্দিষ্ট নিয়মে নিবন্ধন করে টিকা গ্রহণ করা। প্রতিদিন ৮টি উপজেলায় ২শ’ করে, পুলিশ হাসপাতালে ১শ’, বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ৬শ’ করে টিকা দেওয়া হবে। এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। বাগেরহাট জেলায় প্রথম ধাপে ৪৮ হাজার ডোজ টিকা এসেছে।