চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ দেশের প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মোট ৪৯২টি গ্রাম বেকারমুক্ত করা হবে। এজন্য ‘বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন প্রকল্প’ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু প্রক্রিয়াধীন প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে কিছু প্ল্যানিংয়ে পাঠিয়েছি, কিছু ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) কাজ চলছে।’
বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে যুব প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৬৪টি জেলায় ৪৯২টি গ্রামে অর্থাৎ প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে গ্রামকে বেকারমুক্ত করব। এই প্রকল্পের ডিপিপি হয়ে গেছে। আমরা কিছুদিনের মধ্যে এটা ডিপিপিতে পাঠাব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন একটি কনসেপ্ট নিয়েছি। এই গ্রামে আমরা কোনো বেকার রাখব না। আত্মকর্মসংস্থান করব, না হয় কোথাও চাকরির সুযোগ করে দেব। যেভাবে হোক তাদের একটা ব্যবস্থা করার জন্য এই প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।’
বেকারদের তালিকা কীভাবে করা হবে- জানতে চাইলে জাহিদ আহসান বলেন, ‘এক্ষেত্রে কারো সুপারিশ নয়, আমরা নিজেরাই গ্রামকে বেছে নেব। যেভাবে দারিদ্রের হার বেশি সেই এলাকাকে আমরা আগে বেছে নেব। এরপর ধাপে ধাপে অন্যান্য গ্রামগুলোকে নেব।’
এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি নির্ধারিত পলিসি থাকবে। যে পলিসি অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি থাকবে। সেই কমিটি সুপারিশ করবে।’
মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রত্যেক জেলায় একটি করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করব। বেকারমুক্ত গ্রাম সৃজন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র একত্রে করে একটি হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ নেয়া হবে। ’
যানবাহন চালনা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ভিজিটে এসেছিলেন। তিনি এসে বলেছিলেন, আমাদের যারা গাড়ি চালান তাদের কোনো লাইসেন্স নেই। একসঙ্গে এতগুলো লাইসেন্স দেয়ার ক্ষমতা বিআরটিএ বা ওই মন্ত্রণালয়ের নেই। এই কারণে বলেছেন সবাই যদি কিছু কিছু করে ভাগ করে নেয়া যায়, তাহলে সকলেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের আওতায় যাবে। উনি আমাদের নির্দেশ দেয়ার ফলে আমরা ইতোমধ্যে একটি প্রজেক্ট নিয়েছি। ডিপিপি হয়েছে। আমরা প্ল্যানিংয়ে পাঠিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি খুব শিগগিরই এই প্রকল্প অনুমোদন হলে আমাদের যারা গাড়ি চালান তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদান করতে পারব।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে যুব প্রশিক্ষণ-বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ৪৯২ উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ-বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পাঁচটি জেলায় যুব হোস্টেল নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে। এটি হলে বেকার যুবকদের আবাসনে সুবিধা হবে।’
এছাড়া নিবন্ধিত যুব সংগঠনের সংদস্যদের প্রশিক্ষিত করে কর্মসংস্থানে আগ্রহীকরণ প্রকল্প, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প (৭টি কেন্দ্র), কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্ব) হাতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
জাহিদ আহসান বলেন, ‘যুব তথ্য বাতায়ন স্থাপন প্রকল্প, ইনটিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব রিসোর্সেস ফর পভার্টি টেকনোলজি (ইমপ্যাক্ট ) ৩য় পর্ব, যুব ভবন নির্মাণ প্রকল্প, যুবদের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর প্রকল্প, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র জোরদারকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প এবং হোটেল ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।’
এ সময় যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।