সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৯ বছর। শর্ত সাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও প্রবীণ বয়সে খালেদা জিয়া কার্যত কারাবন্দি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নানা রোগে আক্রান্ত। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর তিনি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘ চার বছর তার যথাযথ চিকিৎসা হয়নি। কারাগারে অমানবিক পরিবেশেও তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হার্ট, লিভার, কিডনি ও চোখের সমস্যা ছাড়াও পুরনো আর্থ্রাইটিস এবং নতুন করে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও কোভিড পরবর্তী জটিলতায় তার শারীরিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে খাবারের মধ্যে নানা রকমের ওষুধ দিয়ে অসুস্থ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হলো, তাকে তিলে তিলে শেষ করা। যে নেত্রীকে দেখলাম পায়ে হেঁটে কারাগারে ঢুকলেন, সেই নেত্রী বের হলে হুইল চেয়ারে। আজকে তিনি একের পর এক রোগাক্রান্ত, একের পর এক অসুস্থতায় ভুগছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মনা বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ড একাধিকবার পরামর্শ দিয়েছেন খালেদা জিয়া এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। দেশে তাকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো আর কিছু বাকী নেই। কেননা তার চিকিৎসার জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার, সেসব বাংলাদেশে নেই। ফলে খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে বিদেশে অ্যাডভান্সড সেন্টারে নিয়ে ট্রিটমেন্ট অতি জরুরি।
বুধবার (২৬ জুন) বিকাল ৫টায় বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় খুলনা মহানগর ছাত্রদল আয়োজিত দোয়া মাহফিল পুর্ব আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব পরিহার করে সরকারকে গণতান্ত্রিক পথে চলার আহ্বান জানিয়ে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমোতি না দিলে সরকার দায় এড়াতে পারবে না। তিনি গত শুক্রবার গভীর রাতে খালেদা জিয়া অসুস্থ হলে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃক অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা না দেয়ার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান। আলোচনা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তাজিম বিশ^াসের সভাপতিত্বে এবং সৈয়দ ইমরানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, মো. হাসান ফকির, হেদায়েত উল্লাহ দিপু, ওয়াহিদুজ্জামান খান, পারভেজ হাসান মিজান, আলী আকবর, মো. মাজহারুল ইসলাম রাসেল, তরিকুল ইসলাম নকিব, ইলিয়াস সরদার, শাকিল আহমেদ, মাসুম বিল্লাহ, রাজু আহমেদ, নাজিম উদ্দিন শামীম, ইয়াছিন গাজি, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান বিপ্লব, আরিফ মোল্লা তূর্য্য, ইসমাঈল হোসেন, হানিফ আকাশ প্রমূখ।