বেনাপোল থেকে সব ধরনের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রাখে মালিক সমিতি। তারা বলছে, যাত্রী উঠা-নামার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। ভোগান্তিতে পড়েছে ভারত ফেরত শত শত পাসপোর্ট যাত্রীরা।
বাস মালিক সমিতির নেতারা জানান, যানজট নিরসনের লক্ষ্যে এক সপ্তাহ আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পরিবহন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বেনাপোল চেকপোস্ট এবং বেনাপোল বাজার থেকে যেসব বাস যশোর-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যায় সেগুলো নতুন নির্মিত পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়তে হবে। আর ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের ভোরে বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে টার্মিনালে চলে যাবে।
এরমধ্যে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের টার্মিনালে জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ায় ওই যাত্রীরা হয়রানির শিকার হন বলে দাবি করেন মালিক সমিতির নেতারা। এ কারণে বন্ধ রাখা হয় বাস চলাচল।
পাসপোর্টধারী যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ভারতের পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সাথেই নির্মাণ করা হয়েছে টার্মিনাল। কিন্তু বাংলাদেশে বর্ডারে চালু টার্মিনালটি বন্ধ করে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
পাসপোর্টধারী যাত্রী সোহেল রানা বলেন, ঢাকা থেকে এসে দুই কিলোমিটার দূওে বেনাপোল পৌর টার্মিনালে বাস থেকে রাত ৩টার সময় নামিয়ে দেয়। পরে দুই ঘণ্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি। আমরা চাই চেকপোস্টে অবস্থিত স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের বাস টার্মিনাল থেকে বাসগুলো চালু করা হোক।
এ বিষয়ে বেনাপোল পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা তাদের নির্দেশনা মতো চলছিলাম। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসগুলোর যাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে খালি বাস পৌর টার্মিনালে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে যাত্রীদের জোরপূর্বক টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে সেই যাত্রীদের লোকাল বাসে করে চেকপোস্টে পাঠান টার্মিনালে থাকা পৌর সভার লোকজন। প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে কোনো গাড়ি ছাড়েনি। এছাড়া শনিবার বেনাপোল থেকে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পৌর প্রশাসক ও শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. কাজী নাজিব হাসান জানান, চেকপোস্টের বাস টার্মিনাল বন্ধ করা হয়নি। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী টার্মিনালের গেট বন্ধ রেখেছে। টার্মিনালের গেট বন্ধ থাকার কারণে শুক্রবার গভীর রাতে গাড়িগুলোর যাত্রী পৌর বাস টার্মিনালে নামিয়ে দিয়েছিল। রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস চেকপোস্টে গেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে না। আলোচনা না করেই বাস বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি।