খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আফজাল হোসেন। জন্ম বটিয়াঘাটা উপজেলায় বলিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নে। তিনি তার কর্ম জীবন শুরু করেন ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানি রাইফেল্স (EPR)সিলেটে ১ নং সেক্টর ৩নং উইং খাজেমছি বাড়ি বড় গ্রাম ক্যাম্পে।সেখানকার দ্বায়িত্বে ছিলেন কমান্ডার আলী আজম চৌধুরী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭মার্চের ভাষনে উদ্ভুদ্ধ হয়ে ৮ মার্চ রাতে বিহারি পাকিস্তানি পাঞ্জাবিদের মেরে আলী আজম চৌধুরীর নির্দেশে রাজ পথে নেমে পরের আফজাল হোসেন। সিলেটে আক্রমন করার জন্য সুরমা ব্রিজের নিচে দুরাত ভারি মেশিনগান নিয়ে এমবুস লাগিয়ে পাক হানাদার বাহিনী থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান নেন।হঠাৎ গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গেলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ করবে।সেখান থেকে সরে এসে সুতরকান্দি ঘাটি করা হলো। তারপর ভারতের ঝরাপাতা গ্রামের করিমগঞ্জে আবার এমবিস লাগানো হলো।সেণানে কমান্ডার ছিলেন সি আর দত্ত।কিন্তু সি আর দত্তের সাথে মনমালিন্য হলে লেফটেন্যান্ট আনোয়ার সুবেদার বক্কর ও ক্যাপ্টেন আফজাল হোসেন চলে আসেন কলকাতা। ৯নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর এম এ জলিল সাথে যোগদান করেন তারা।রিসিপশন তকিমপুর ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাদের।সেখানে ছিলো ভারতের ক্যাপ্টেন মেজর সিপ।সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন দেওয়ার কাজে নিয়জিত হন আফজাল হোসেন। ৯ নং টাউন শ্রিপুর ইপিআর ক্যাম্প দখল করেন মুক্তি বাহিনী। ডুমঘাট মুন্সিগঞ্জে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ হয়।৩ থানা অপারেশন করে ২৩ জন মারা যায়। সেখানে নৌকা ডুবিতে মুক্তি বাহিনীর সকল অস্ত্র হাত ছারা হয়ে যায়। শুধু এস এম জি নিয়ে পারুলিয়ার কাছে আসলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে গোলাগুলিতে ১৩ জন হানাদার মারা যায়। এবং ১৯ জন হানাদারকে মেজর জলিলের কাছে হাজির করা হয়।ক্যাপ্টেন আফজাল হোসেন ৩০০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে নৌকায় বাজুয়া এসে বিউটি অফ মোংলা মানের একটি লঞ্চ করে বটিয়াঘাটা খরিয়া গেটে নামিয়ে দেওয়া হয়।সেখানে বয়েরভাঙ্গা হাই স্কুলে ক্যাম্প করা হয়।৪ দিন পরে কাজিবাছা নদী থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ করে কিন্তু কিছুক্ষণ গোলাগুলির পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পিছু হটে গেলো।তার পর আফজাল হোসেন রামপাল কালেখার দিঘিরপার ক্যাম্প করেন।সেখানে হঠাৎ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মেজর রজব আলী ফকির সলতেখালি নদী দিয়ে পাকিস্তানি গোলাবোট নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। সেখানে ইউসুফ নামে একজন মুক্তিযোদ্ধাসহিদ হন।দের মাস ক্যাপ্টেন আফজালের বাহিনী সেখানে অবস্থান করে এবং একের পর এক যুদ্ধ চলে। তারপর কামরুজ্জামান তাজুল ইসলামের পরিকল্পনা বাগেরহাট আক্রমণ করা হবে।রাত ১০ টার দিকে পাকিস্তানিরা আক্রমণ করে। গোলাগুলির মধ্যে হঠাৎ একটি গুলি এসে লাগে ক্যাপ্টেন আফজাল হোসেনের ডান পায়ে।তখন তিনি তার সব সঙ্গীদের সরিয়ে দিয়ে একটি কৌশল অবলম্বন করেন।চেয়ারের সাথে দড়ি বেধে দেন আর তার সাথে বেধে দেন বোমা।দড়িতে যত টান পরবে বোমা ফাটবে। এই সুযোগে রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে সরে আসেন ক্যাপ্টেন আফজাল। সহিদ হন হবিদার মজুমদার নামে একজন সাহসি মুক্তিযোদ্ধা।বাকি ১৩ জন নিয়ে পশ্চিম হালিয়া দিয়ে বালির নৌকায় করে আবার বাজুয়া এক খৃষ্টান বাড়ি আশ্রয় নেন তারা।সেখান থেকে মোট ২৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ভারতের বদরতলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ১১দিন থাকতে হয় তাকে।সুস্থ হলে মেজর জলিল আফজাল হোসেনকে পাঠিয়ে দেন সাতক্ষীরা। সেখানে বারপুতি হাইস্কুলে ঘাটি করেন তারা।পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ।চলে টানা ৩ দিন।৩ দিন পরে পিছু হটে যায় হানাদার বাহিনী। সেখান থেকে ডুমুরিয়া সরাফপুর পার হয়ে বটিয়াঘাটা সাহা বাড়ি এসে উঠেন আফজাল হোসেনসহ সব মুক্তিযোদ্ধা।মেজর জয়নালউদ্দিনের নির্দেশে গল্লামারি আক্রমণ করে মুক্তি বাহিনী শত্রু মুক্ত করেন। তারপর রেডিও সেন্টার আক্রমণ করে ১৭ ডিসেম্বর রাতে শত্রু মুক্ত করেন তারা।