নজিরবিহীন হামলার শিকার হলো মার্কিন কংগ্রেস। ক্যাপিটল হিলে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা। পুলিশের সাথে সংঘাত-সংঘর্ষে প্রাণ গেছে এক নারীসহ অন্তত ৪ জনের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি করা হয়েছে কারফিউ-লকডাউন।
বুধবার, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষণায় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ- সিনেট ও হাউজের যৌথ অধিবেশনে হয় ভোট। বিতর্ক শুরুর ঠিক আগেই পূর্বঘোষিত সমাবেশে, কখনোই নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করবেন না বলে ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ডেমোক্র্যাটরা আমাদের বিজয় চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। যথেষ্ট হয়েছে। এই চুরি আমরা আর মেনে নেবো না। কখনোই হার মানবো না। কংগ্রেস যেন কেবল বৈধ ভোটই গণনা করে, তা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। আমি জানি, এই দাবি জানাতে সবাই এখান থেকে ক্যাপিটল হিলে যাবেন। আজ দেখা যাবে, বৈধ দাবির পক্ষে রিপাবলিকানরা দাঁড়ায় কিনা।
এরপরই ভোট চুরি ঠেকানোর শ্লোগান দিয়ে কংগ্রেসে হামলা চালায় তার সমর্থকরা। চলে গুলিও। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে একে ‘ট্রাম্পের শেষ কামড়’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে গণমাধ্যম। বলা হচ্ছে, বৈধ বা আনুষ্ঠানিক কোনো বিতর্কের সুযোগ না থাকায় শেষ পর্যন্ত শক্তি প্রয়োগের পথে হাঁটলেন তিনি। প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ, হতবাক খোদ তার দল রিপাবলিকান পার্টিই।
নিন্দা জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশসহ অনেকে। যদিও নৈরাজ্য উস্কে দিয়ে আবার বিক্ষোভকারীদের শান্ত হয়ে ঘরে ফেরারও আহ্বান জানান ট্রাম্প। এ ঘটনাকে গণতন্ত্রের ওপর নির্লজ্জ হামলা আখ্যা দিয়েছেন বাইডেন। ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ১২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রেখেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ
বাইডেন আরো বলেন, ক্যাপিটলের ভেতরে ঢুকে পড়া, ভাঙচুর চালানো, আইনপ্রণেতাদের অফিস দখল করা, তাদের জীবন বিপন্ন করা-এগুলো বিক্ষোভ নয়, এটা গণতন্ত্রের ওপর হামলা। সারা বিশ্ব এ লজ্জাকর দৃশ্য দেখছে। যে দেশ গণতন্ত্রের আলোকবর্তিতা হিসেবে পরিচিত, সেখানে এমন অন্ধকার মুহূর্তে দেখতে হবে- এটা খুবই দুঃখের বিষয়।
১৮১৪ সালে যুদ্ধের সময় নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর ২শ’ বছরে ক্যাপিটল হিলে প্রথম হামলা এটি। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় ভূমিকার অভিযোগের মধ্যেই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয় ন্যাশনাল গার্ড। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে ওয়াশিংটন ডিসি।