চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় এবার ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। আগে ডেঙ্গু হলে সামান্য চিকিৎসাতেই ভালো হয়ে যেত। কিন্তু এবার আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীরই রক্ত লাগছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তের প্লাটিলেট বিভাজন করে রোগীকে সাদা অংশ দেওয়া হচ্ছে। রক্তের এই প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য রয়েছে আলাদা মেশিন। তেমন একটি মেশিন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসাপাতালে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেটি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে বাড়তি ভোগান্তিতে।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, যারা রক্ত পরীক্ষা বা প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য মিটফোর্ড হাসাপাতালের ব্লাড ব্যাংক যাচ্ছেন তাদের বিকল্প হিসাবে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে। মিটফোর্ডে সামন্য কিছু নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হলেও, বাকি কাজ করতে হচ্ছে অন্য হাসপাতালে।
লিয়াকত আলী নামের এক ভুক্তভোগী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনদিন ধরে আমার মেয়ের জামাই এ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বেশি অসুস্থ হওয়ার চিকিৎসক রক্তের সাদা অংশ লাগবে বলে জানান। তার কথা অনুযায়ী রক্ত সংগ্রহ করে প্লাটিলেট বিভাজনের জন্য মিটফোর্ড হাসাপাতালের ব্লাড ব্যাংক যাই। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয় যে, তারা রক্তের সাদা অংশ বিভাজন করতে পারবেন না। তাদের মেশিন বিকল। ওখান থেকে তারা বলেন যে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অথবা শান্তিনগরের কোয়ান্টামে গিয়ে রক্তের প্লাটিলেট বিভাজন করে সাদা অংশ নিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি আমার কাছে অদ্ভুত আর কষ্টদায়ক মনে হচ্ছে। ’
এ বিষয়ে মিটফোর্ড হাসাপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিকেল বিভাগ ব্লাড ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তা ডা. দানিশ আরেফীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রক্ত পরীক্ষা ও প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা অনেক দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে একবারে যে নষ্ট হয়ে গেছে, সেটা বললে ভুল হবে। রক্তের প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা লোড নিতে পারে না। বিদ্যুৎতের লো ভোলটেজ দেখায়। বিষয়টি অনেকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ঠিক করবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন। দুই সপ্তাহে আগে এ বিষয়ে একটি লিখিত দরখাস্তও দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্লাটিলেট বিভাজনের মেশিনটা যতক্ষণ না ঠিক করা হচ্ছে ততক্ষণ রোগীদের বিকল্পপথ দেখতে হবে। এমন বিষয়ে রোগী আসলে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও শান্তিনগরের কোয়ান্টামে গিয়ে রক্তের অংশের ভাগ করে আনতে বলি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই ‘
এদিকে ট্রান্সফিউশন মেডিকেল বিভাগ ব্লাড ব্যাংকের সহকারী অধ্যাপক ডা. ওয়াসিম বলেন, ‘এটা কতদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে তা আমি বলতে পারব না। আমি কিছু আগে এখানে বদলি হয়ে এসেছি। এসেই জানতে পেরেছি যে, রক্ত পরীক্ষার ও বিভাজনের মেশিনটায় সমস্যা আছে, ঠিকমত লোড টানতে পারে না। তাই বিকল্প হিসাবে কিছু কিছু রক্ত পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল বা ব্লাড ব্যাংকে যেতে বলা হয়।
এছাড়াও লালবাগ থেকে মিটফোর্ড হাসাপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করাতে আসা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমার ছোট ভাইয়ের ডেঙ্গু ধরা পড়লে প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাই। সেখানে গিয়ে খুব বাজে অবস্থা দেখি। এরপর ওখান থেকে ধানমন্ডির একটি হাসাপাতালে গিয়েও সিট খালি পাইনি। পরে মিটফোর্ডে এসে কিছু টাকা দিয়ে সিটের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ’