করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহতা প্রতিরোধে মেগা প্রকল্পগুলোয় বরাদ্দ করা অর্থ দিয়ে অতিদ্রুত সরকারকে টিকা কেনার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায়ে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে সোমবার (৫ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ‘করোনার ভাকসিন সংগ্রহ-বিতরণ-পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কমিটি’র আহ্বায়ক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ প্রস্তাব দেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব হচ্ছে, করোনা সংক্রমণ সংকটকে জাতীয় পর্যায় এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। টিকা কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দরকার হলে অন্যখাত থেকে বিশেষ করে মেগা প্রকল্পে বরাদ্ধ ডাইভার্ট করে এ খাতে কাজে লাগাতে হবে। এটা অতি জরুরি।’
‘বিশ্বের বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি থেকে টিকা সংগ্রহ করা দরকার। অতি শিগগরিই। এক লাখ, দুই লাখ, পাঁচ লাখ নয়, কোটি কোটি টিকা আমদানির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে করোনা ৪/৬ মাসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘টিকা ক্রয় আমরা বিরোধী দল করতে পারব না, এটা সরকারকেই করতে হবে। যদি সরকার না পারে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। সেই দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করে সরকারকে প্রয়োজনে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা পারবে তারা এদেশের জনগণকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসবে।’
বিএনপি বিশ্বাস করে, ‘দেশের জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে অতি দ্রুতই টিকা দেয়ার মাধ্যমেই একমাত্র করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে সরকারকে পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং জনগণকে তা অবহিত করতে হবে।’
সাবেক মন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘এই করোনা নিয়ে খামখেয়ালী, দুর্নীতি এবং যে ব্যর্থতা সরকার দেখিয়েছে তার ফলে আজকে প্রত্যেকদিন মানুষ জীবন দিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছে বাংলাদেশে এবং ৮ হাজার ৬০০-এর ওপরে শনাক্ত হয়েছে। প্রত্যেকদিন একই অবস্থা। এটা কমার কোনো লক্ষ্মণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। করোনা প্রতিরোধে টিকা হচ্ছে একমাত্র উপায়।’
‘আমরা বলব, অতিদ্রুত টিকা সংগ্রহ এবং টিকাদান কর্মসূচিকে স্বচ্ছ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। আমরা আগেও বলেছি, এ জন্য জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত করে অগ্রসর হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। আজকে পত্র-পত্রিকায় দেখবেন, করোনা সংক্রমণের ব্যাপারে যে খবরাখবর—সবই হতাশার খবর। আমরা আশার খবর শুনতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই কাজ করতে চাই। সরকারকেও সেইভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে আমি দেশের সব মানুষকে বলব, আপনারা মাস্ক ব্যবহার করুন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।’