চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃমোংলা বন্দরে দূদকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘গণশুনানী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় বন্দরের কাজের গতিশীল বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েক ধরনের মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায় হতবাক হয়ে পড়ে গণশুনানীতে অংশগ্রহণকারীরা। এছাড়াও মুখোমুখি অবস্থানে অংশ নেন সেবা গ্রহীতা ও সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বন্দর ভবন চত্বরে এ গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গনশুনানীতে উঠে আসে সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানীর নানা চিত্র। বিশেষ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের ক্রয়কৃত হাই স্পীট বোর্ড, জলযান, ইকুপমেন্ট, ড্রেজিং ও বন্দর গ্রাউন্ডে সড়ক নির্মাণ, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টসহ কাস্টমসের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র আলোচনায় আসে। আর উত্থাপিত ওই সকল অনিয়ম প্রসঙ্গে বাস্তব অবস্থার ব্যাখা দেন বন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। গণশুনানীতে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) এএফ এম আমিনুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য অর্থ (যুগ্ম-সচিব) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইয়াসমিন আফসানা, বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, দুদকের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল গফ্ফার, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাহাত মান্নান উপস্থিত থেকে সেবা গ্রহীতার অভিযোগ ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের বক্তব্য শোনেন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টানা সাড়ে ৩ ঘন্টার অধিক সময় অনুষ্ঠিত ওই গণশুনানীতে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিযোগকারী এবং স্থানীয়সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় দুর্নীতি অনিয়মের বিভিন্ন বিষয়ে তড়িৎ তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন দুদক কমিশনার।
সুত্র জানায়, গণশুনানীতে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর কয়েকশ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে উঠে আসে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সকল মালামাল ক্রয়ের সঠিক কাগজ পত্র জমা দেয়ার জন্য তাগিদ দেন দুদক কমিশনার। অন্যদিকে সরকারি জমি ও মানুষকে ভয়ভীতি দিয়ে সম্পদ লুটকারী ও ক্ষমতাবানদের সময় থাকতে সঠিক পথে চলার জন্য হুঁশিয়ার করেন তিনি।
এ বিষয় দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমাদের দেশে বিশেষ করে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে সাধারণ মানুষ সহজ সরল। আর এ সহজ সরল মানুষদের প্রতিবাদী ও সচেতন করতে এ শুনানীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা হয়রানী ছাড়াই নিজেদের দৈনন্দিন কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হবেন। অপরদিকে সম্ভাবনাময় মোংলা বন্দরের বিভিন্ন নৌযান ও মালামাল ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ লক্ষে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় নথি তলবসহ আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান দুদকের এ কর্মকর্তা।