বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সঙ্ঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের সীমাহীন অত্যাচার-জুলুম, অতঃপর পরিকল্পিত হামলায় গুরুতর আহত এক ভাই ও দুই বোন এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উপজেলার শাসন গ্রামে গত ২৮জুন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত দুই বোন ও এক ভাই গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরা হলেন, উপজেলার শাসন গ্রামের মৃতঃ আরোজ আলীর ছেলে ইমদাদুল শরীফ (২৫), মেয়ে আসমা বেগম (৪৫) ও নাজমা (৩০)।
এদের মাঝে কেবল নাজমার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের যখম এবং দুই হাত ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে গত এক সপ্তাহের চিকিৎসায়ও শঙ্কামুক্ত হতে পারেনি ছোটভাই মোঃ ইমদাদুল শরীফ । এছাড়া দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপে কাটা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করায় প্রায় একই অবস্থা বড় বোন আকলিমা বেগমের।
অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনায় দিশেহারা ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে আহতদের মা মোসাঃ হালিমা ওরফে হালি।
এ তথ্য সংগ্রহে গেলে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আকলিমা বেগম জানান, প্রতিবেশী নজু শেখ দীর্ঘ দিন ধরে তাদের উপর সীমাহীন অত্যাচার জুলুমসহ গৃহপালিত পশুপাখি দিয়ে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিসাধন করে আসছে। ঘটনার দিন নিরুপায় হয়ে নজু শেখের একটি হাস তারা আটকিয়ে রাখে। এরপর সন্ধ্যায় নজু শেখের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন দুষ্কৃতিকারী তাদের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে। তখন হাঁসটি ছেড়ে দেয় এবং আর যেন ক্ষতি না করে সেজন্য নজু শেখকে অনুরোধ করা হয়। কোন অনুরোধ তোয়াক্কা না করে অসহায় পরিবারের সদস্যদের ওপর বেপরোয়া হামলা চালায় নজু শেখ সহ ৩০/৩৫ জন দুষ্কৃতিকারী। এঘটনায় গুরুতর আহত দুই বোন ও এক ভাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে নিকটস্থ গোপালগঞ্জ হাসপাতালে পাঠায় কর্তব্যরত চিকিৎসা। উক্ত হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা। আসমা বেগম আরো বলেন, অসহায় গরীব মানুষ তারা, তার নিজের এবং ছোট ভাইয়ের প্রয়োজনীয় উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আর্থিক সামর্থ্য নেই। স্থানীয়দের সাহায্যে এবং হাসপাতালের সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের চিকিৎসা চলছে। এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে আসমা বেগম আরো বলেন, তারা কিছুটা সুস্থ হলেই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
অনেক চেষ্টা করেও এবিষয়ে নজু শেখের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মোল্লাহাট থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, মারামারি হয়েছে শুনছি, কেউ থানায় আসে নাই, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।