এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট থেকে : হায়রে বিধাতা ! শেষ সম্ভল টুকু কেড়ে নিলে ১১টি বছর জীবনযুদ্ধে সংগ্রাম করে ছেলে মেয়েদের নিয়ে আগলে রাখা স্বামীর বসত ভিটা মাটিতে মাথাগোঁজার ঠাই বসতঘর তৈরি করেছিলো অনেক কষ্টে। অন্যের বাড়িতে ঝিঁ এর কাজ করে। ২ মেয়েকে বিবাহ দেন। বড় ছেলে এমএস সি প্রথম বর্ষের ছাত্র বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, ছোট ছেলে নয়ন বিশ্বাস নবম শ্রেনীর ছাত্র। ঘরে নেই একমুঠো চাল। প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় জুটছে খাবার।
হতদরিদ্র পরিবারে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয় তাদের। একদিকে করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া অন্যদিকে বুধবার রাতে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে শেষ সম্ভলটুকু মাথা গোজার ঠাই বসতঘরটি কেড়ে নিয়েছে। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন শিখা রানি বিশ্বাস তার পরিবার পরিজন নিয়ে।
শুক্রবার সরেজমিনে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জিউধরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, এমন একটি হতদরিদ্র পরিবারকে।
কথা হয় ওই পরিবারের একমাত্র উপার্যনকারি গৃহীনি শিখা রানি বিশ্বাসের সাথে তিনি সংবাদ কর্মীদের দেখে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। মুখে কোন ভাষা নেই দু’ নয়ন থেকে অজোরে ঝড়ছে জল। কিছুক্ষুন পর পর কাপড়ের আচঁল থেকে অশ্রু মুছছেন। ১১ বছর পূর্বে স্বামী সুবোধ চন্দ্র বিশ্বাস মৃত্যু-বরণ করেন। ছোট ছোট ৪ ছেলে মেয়ে রেখে যান। সম্ভল শুধু ৬ শতক বসত ভিটা। পরবর্তীতে স্ত্রী শিখা রানি সংসারের তাগিদে নেমে পড়েন প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে। ২ ছেলের লেখা-পড়ার খরচ জোগান দিতে হিম-সিম খেতে হয় তার। এর মধ্যেও স্বামীর ভিটেটুকুতে রাস্তায় নারী শ্রমিকের কাজ করে বসত ঘর তৈরি করে।
বড় ছেলে বিশ্বজিৎ বিশ্বাস খুলনা বিএল কলেজে এমএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। নিজেদের থাকা বসতঘরটি ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পরে ভিটেমাটিতে পাঠ্যবই শুকানোর জন্য ছড়িয়ে রেখেছে। কি করবে এখন তারা। কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা। ঘরে খাবার নেই, কোথায় পাবে বই কেনার টাকা, পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে তার।
হতদরিদ্র পরিবারটি ২দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। রাত্র যাপন করছেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। জনপ্রতিনিধিরাও খোঁজ নিচ্ছেননা ওই পরিবারটির। দেখার যেন কেউ নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বর কেহই তাকে অবহিত করেননি। ওই পরিবারের খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।