যশোর প্রতিনিধি : ১৬ জুলাই যশোরের শহিদ সাংবাদিক শামছুর রহমান কেবল এর ২০ তম হত্যাবার্ষিকী। এক এক করে পেরিয়ে গেল দুই দশক। তারপরেও এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়নি। বরং বছরের পর বছর আইনের মারপ্যাঁচে আটকে রয়েছে এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া।১৯ বছর ধরে রাজপথে থাকা স্থানীয় সাংবাদিক সমাজও বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ। কিন্তু তারপরও শামছুর রহমানের খুনিদের শাস্তি দেখার অপেক্ষায় নিহতের স্বজন ও সহকর্মী সাংবাদিকরা।
২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে শহরের প্রান কেন্দ্র দড়াটানা সদর হাসপাতালের সামনে জনকণ্ঠ যশোর অফিসে
সাংবাদিক শামছুর রহমান সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় মামলা হলেও ১৩ বছর ধরে শামছুর রহমান
কেবল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে বাদী নিহতের স্ত্রী সেলিনা আকতার
লাকিকে না জানিয়ে মামলাটি খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লাকি হাইকোর্টে আপিল করে বলেন, মামলার অন্যতম আসামি খুলনার চিহ্নিত সন্ত্রাসী
মুশফিকুর রহমান হিরক পলাতক রয়েছে। এই মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথে খুলনার সন্ত্রাসীদের সর্ম্পক
রয়েছে। ফলে তার পক্ষে খুলনায় গিয়ে সাক্ষ্য দেয়া সম্ভব নয়। বাদির এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি
কেন যশোরে ফিরিয়ে দেয়া হবে না তার জন্য সরকারের উপর রুল জারি করেন। একই সময় মামলার এক আসামিকে মামলা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আব্দুস সামাদ হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে দেন। সেই থেকে শামছুর রহমান কেবল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। বিচার না পেয়ে, হতাশ শামছুর রহমানের স্ত্রী।
দীর্ঘ দেড় যুগেও বেশি সময়ে ধরে সাহসী সাংবাদিকতার অগ্রপথিক শামছুর রহমানের হত্যার বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ
যশোরের সাংবাদিকরা। যে কোন প্রক্রিয়ায় মামলার কার্যক্রম শুরুর দাবি তাদের।
যশোরের পাবিলক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম পিটু বলেন, মামলাটি যাতে সচল হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।
মামলা সচল হলে দ্রুত এর বিচার কার্য শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আইনি মারপ্যাচে মামলার কার্যক্রম থমকে দিতে পারলেও সহকর্মীদের হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে পারেনি
সাংবাদিক শামসুর রহমানের নাম। দিনটি উপলক্ষ্যে যশোরে সাংবাদিক সংগঠন গুলো নিয়েছে নানা কর্মসূচী।
একই সাথে দাবি জানাচ্ছে, জঘন্য এই হত্যাকান্ডের বিচার করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।