‘যারা দিন আনে দিন খায়,তাদের খাওয়ার কী ব্যবস্থা করছেন? এই লোকগুলোকে তো ঘরে রাখতে পারবেন না। যার পেটে ভাত নেই তাকে লকডাউন দিয়ে কী করবেন,’ এই কথাগুলো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।
করোনার সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে সরকার ঘোষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন,’সরকারের কোনো সমন্বয় নেই,কোনো পরিকল্পনা নেই,কোনো রোড ম্যাপ নেই। এই যে সাত দিন দিয়েছে,তারপরে কী হবে? এখানে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে দিন আনে দিন খায় মানুষজনে। এটা দায়িত্ব সরকারের যে এই মানুষগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করা। যেটা সরকার করতে ব্যর্থ হয়েছে সম্পূর্ণভাবে।’
তাহলে কি লকডাউনের বিরোধিতা করছেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন,’না, আমরা বিরোধিতা করছি না। এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি যে একটা অকার্যকর শাটডাউন করছে। হাজার হাজার লোকজন বেরুচ্ছে, হাজার হাজার লোক বাজারে যাচ্ছে। আবার শিল্পকলকারখানা খোলা রাখছে। দেখুন কতটা স্ববিরোধিতা।’
তাহলে কীভাবে লকডাউন সফল করা যায়- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ব্যাপারটা তো সহজ নয়,কঠিন নিঃসন্দেহে। আলাউদ্দিনের চেরাগ কারেও হাতে নেই যে মুহূর্তে ঠিক করে ফেলবেন।’
তিনি বলেন,রাজনৈতিক দল,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এনজিওগুলোকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করলে এই ধরনের লকডাউন সফল করা যায়। কিন্তু সরকারের সেই উদ্দেশ্যেই নেই বলে মনে করেন ফখরুল। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ঠিকমতো হচ্ছে না বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।
রোজার আগে চাল-সয়াবিন তেল-চিনি-আটা-ময়দাসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের সময়ে যে ধরনের লাগামহীন দুর্নীতি চলছে, মূলত তারই ধারাবাহিকতায় লুটেরা সরকারের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনাও জিম্মি হয়ে আছে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণে বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার দুরীকরণের কোনো বিকল্প নাই।’
ফখরুল বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার দিবসকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো ঘটালো সরকার, আমি এটাকে পুরোপুরিভাবে পরিকল্পিত ঘটনা বলে মনে করি। তারা এটাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করবার আরেক বড় প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন,দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তিনি বলেন, ‘আজকেও আমি এখানে আসার আগে খবর নিয়েছি- একই অবস্থা। তিনি স্ট্যাবল আছেন। ইতোমধ্যে তার চিকিৎসাও শুরু হয়েছে।’