পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এক থেকে দুই কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের চলমান টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা চাওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ মিলিয়ন ডোজ টিকা অতিরিক্ত রয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন টিকা চেয়েছি।
তিনি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সরকার সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভারতকে কোনো টিকা দেয়নি বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাকে জানিয়েছেন।
এ ছাড়া রাশিয়া থেকে টিকা আনার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে কবে টিকা আসবে, কতটুকু আসবে সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, তবে দেশটির সাথে আলোচনার প্রেক্ষাপটে রাশিয়া একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যার ভিত্তিতে তারা ভ্যাকসিন দেবে বা কো-প্রোডাকশনে যাবে। সে প্রস্তাব এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরীক্ষা করে দেখছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকার জোগানে ঘাটতি থাকায় ২৬ এপ্রিল প্রথম ডোজ টিকা দেয়া বন্ধ করার পর বুধবার ৫ মে টিকা নিতে নিবন্ধন বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকার বলছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির নিবন্ধন বন্ধ থাকবে।
এদিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন ১৩ লাখ ডোজের বেশি টিকার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
মূলত সিরাম ইন্সটিটিউটে তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ওপর নির্ভর করেই বাংলাদেশ টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছিল।
এখন সরকার বিকল্প হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করছে বলে জানানো হয়েছিল।
২০২০ সালে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হবার পর, সব মিলে বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ টিকা।
গত জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এর পর মার্চ ও এপ্রিলে কোনো টিকা আসেনি। এর মধ্যে এপ্রিলের শেষ দিকে ভারত থেকে অদূর ভবিষ্যতে টিকা পাওয়া যাবে না এমন আভাস দেয়া হয়েছে।