ঈদ উপলক্ষে ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন সেখানেই ঈদ উদযাপন করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘করোনার সময়ে বেঁচে থাকলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তো দেখা হবেই। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন সেভাবেই ঈদ উদযাপন করেন। আর যারা বিত্তশালী আছেন, তারা যারা একটু দুস্থ তাদের সহযোগিতা করেন।’
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও জলযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এসব জলযান ও অবকাঠামো এর উদ্বোধন করেন। অন্যদিকে নৌ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্ত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা যাতে সারাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য সবার কাছে আমার অনুরোধ। আপনারা স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে চলুন। আর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাতায়াত একেবারে না পারলেই আপনারা করবেন না। কারণ এই যাতায়াতটা করতে গেলেই কে যে সংক্রমিত হবেন আপনি জানেন না। কিন্তু সে যখন অন্য জায়গায় যাবে অনেক লোককে করোনা সংক্রমিত করবে। তখন তাদের জীবন নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। সেটা যাতে না হয় সে জন্যই আমরা কিন্তু যাতায়াত সীমিত করার পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু সেই সঙ্গে দেশের মানুষের আর্থিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলো যেন অব্যাহত থাকে, সেটাও সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সেটার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, নদীগুলোকে আমাদের বাঁচাতেই হবে। বাংলাদেশ বদ্বীপ, এটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই বদ্বীপটা যেন উন্নত হয়।
তিনি বলেন, জাতির পিতা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করেছিলেন। ভারতের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছিলেন, সম্পন্ন করতে পারেননি। তিনিই প্রথম সমুদ্রসীমা আইন করে দিয়ে যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌ-বন্দর যেমন অভ্যন্তরীণ তেমনি বিশাল সমুদ্রসীমা আমাদের রয়েছে। জাতির পিতা ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। পঁচাত্তর-পরবর্তী জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া তাদের কিন্তু ড্রেজার সংগ্রহে কোনো মনোযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, যেসব নৌযান চলাচল করে প্রত্যেকটা নৌযানের রেজিস্ট্রেশন থাকা উচিত। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে কখন কে কী নৌযান চালাচ্ছে বোঝা যায় না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা যদি নৌযান পরিচালনা করতে পারি, আমি মনে করি দুর্ঘটনা কমে যাবে। নৌযানে যাতায়াতকারী ও পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের ভেতরের জলপথ এখন আর ব্যবহার হয় না, তাতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি রামপাল প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নৌপথ প্রতিবেশীরা ব্যবহার করলে তাতে বাংলাদেশেরই উন্নয়ন। সরকার প্রতিবেশীদের সে সুযোগ-সুবিধা দিতে সচেষ্ট। নদীমাতৃক বাংলাদেশে জলপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের বিকল্প নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে সব নৌযানের নিবন্ধন থাকতে হবে। আর করোনা সংক্রমণরোধে সক্ষম হতে না পারা পর্যন্ত কোথাও যাতায়াতের প্রয়োজন নেই।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার নতুন অবকাঠামো ও জলযান চালু হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিআইডাব্লিউটিএ’র ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী দাদা ভাই, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডাব্লিউটিসির দুইটি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ ও ‘এমভি আইভি রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন একাডেমি।