বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘকে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রস্তুত করার অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গতকাল বুধবার (১৬ জুন) বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে তিনি এ অনুরোধ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে এই সঙ্কটের সমাধান নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ওপর, যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’
রোহিঙ্গাদের চার বছর বাংলাদেশে অবস্থানের নেতিবাচক দিক, বিশেষ করে কক্সবাজারের স্থানীয় লোকজনের ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তা তুলে ধরেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুত যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয় তাহলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এই অঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে।’
জাতিসংঘের বিশেষ দূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাসানচর প্রকল্পের কথা অবহিত করে বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতিসংঘ যেন ভাসানচরে মানবিক সহায়তা প্রদান করে। বিষয়টি বিশেষ দূতকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অনুরোধ করেন মোমেন।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিশেষ দূতকে ভাসানচর পরিদর্শনে আসার আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিশেষ দূত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং অচিরেই যেন প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায় সেজন্য জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও বাইরের সব অংশীজনদের সঙ্গে বিশেষ দূত যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া ভাসানচর পরিদর্শন করতে বিশেষ দূত তার আগ্রহের কথাও জানান।
বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা অংশগ্রহণ করেন।