লবণসহিষ্ণু বিনা ধান চাষের সাফল্য নিয়ে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লবণসহিষ্ণু বিনা ধান চাষের সাফল্য নিয়ে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অতিরিক্ত লবণাক্ততা একটি বড় সমস্যা। এতে কৃষিজমিতে ফসল উৎপাদন কমে যায়। তবে বিনা ধানের মাধ্যমে দক্ষিণ অঞ্চলে লবণসহিষ্ণুতা ও ফলন বাড়ানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের একটি গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। ধানের লবণ- সহনশীলতা বৃদ্ধিতে বিনা ধান সংশ্লিষ্ট জিন ও অণুজীবের প্রয়োগ (জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিনা ধানের ব্যবহারিক প্রয়োগ) শীর্ষক এই গবেষণা প্রকল্পটি অর্থায়ন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে চলমান গবেষণার ফলাফল তুলে ধরতে গিয়ে প্রফেসর ড. মোঃ সালাহ উদ্দীন পলাশ, কৃষি ব্যবসা ও বিপনন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ বলেন, ‘বিনাধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি তার আশপাশের পরিবেশ থেকে লবণ শোষণ করে পানি ও মাটির লবণের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এই গুণ ব্যবহার করে আমরা উপকূলীয় অঞ্চলে শুকনো মৌসুমে পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারি, যা কৃষকদের সব ধরনের শস্য উৎপাদনে সহায়ক।
প্রফেসর ড. মোঃ সালাহ উদ্দীন পলাশ তিনি আরো বলেন, বিনা ধানের বিশেষায়িত মূল থেকে গবেষক দল এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে, যা সাধারণ অণুজীবের চেয়ে দ্বিগুণ লবণাক্ততা লবণ সহ্য করতে সক্ষম। এ–সম্পর্কিত তিনটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
এসব ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক থেকে বায়োফার্টিলাইজার (সার) তৈরি করে একই সঙ্গে ধানগাছের লবণ-সহিষ্ণুতা এবং ফলন বাড়ানো সম্ভব। বিনা ধান উপকূলীয় এলাকায় ধানি ঘাস নামে পরিচিত৷ এই ধানের তেমন ফলন হয় না, খুবই কমসংখ্যক দানা পাওয়া যায়। কিন্তু অন্যান্য চাষকৃত ধানের জাতের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। গবেষকএই প্রকল্পের তিনটি মূল লক্ষ্য হলো বিনা ধানের জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলো সাধারণ ধানের মধ্যে এনে লবণ সহনশীল ধানের উদ্ভাবন, বিনা ধানের মধ্যে বসবাসরত অণুজীবের প্রয়োগের মাধ্যমে (রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে) ধানের ফলন বাড়ানো এবং শুষ্ক মৌসুমে যখন লবণাক্ততা বেড়ে যায়, তখন বিনা ধান দ্বারা শোধনকৃত পানি ব্যবহার করে সাধারণ ধানের ফলন বাড়ানো৷ যেহেতু বাংলাদেশে লবণাক্ততার মধ্যেই আমাদের ফসল উৎপাদন করতে হবে, সে ক্ষেত্রে এই উদ্ভাবনটা আমাদের অনেক কাজে লাগবে। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের উদ্দেশ্যও বাস্তবায়ন হবে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় ডুমুরিয়া উপজেলা অফির্সাস ক্লাবে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত প্রশিক্ষণে সভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মোঃ সালাহ উদ্দীন পলাশ, কৃষি ব্যবসা ও বিপনন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। বিশেষ অতিথি বৃন্দ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী হোসেন, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ]। মাজহারুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিনা উপকেন্দ্র, সাতক্ষীরা।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষিবিদ মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ হামিদুল ইসলাম,উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রবিউল বিশ্বাস,করুণা মন্ডল, মিতা পাল,সমেন্দ্র কুমার মন্ডল,কৃষক আবু হানিফ মোড়ল, তাপস কুমার বিশ্বাস, নবদ্বীপ মল্লিক,ইমরান খান, নিউটন মন্ডল, সরোয়ার হোসেন,শুকেশ ,ইমরান খান, ইমন খান ও শেখ মনিরুল ইসলাম, প্রমুখ।
বাস্তবায়নে: কৃষিতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ অর্থায়নে: ব্র্যাক ব্যাংক স্পেশাল সিএসআর ফান্ডেশন।