চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ বাগেরহাটের শরণখোলায় দশম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীর মা মামলা করেছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে রায়েন্দা সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহম্মেদ (বিএসসি) ও সহকারী শিক্ষক মোঃ শাহিনুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে শরনখোলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে ওই ছাত্রীর মা বলেছেন, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারী স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের জন্য নাম তালিকাভুক্ত করতে বিদ্যালয়ে যায় তার মেয়ে। ওই সময় শিক্ষক শাহিনুজ্জমান শাহীন তাকে ডেকে যৌন উত্তেজনা মুলক বিভিন্ন কথা বলে এবং শ্লীলতাহানি করে। বিষয়টি সাথে সাথে প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি শাহিনের পক্ষ নিয়ে গালমন্দ করে আমার মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দেন।
ওই লজ্জা ও অপমান সইতে না পেরে স্কুল থেকে বের হয়ে কীটনাশক (বিষ) পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমার মেয়ে। পরে তাকে প্রথমে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ওই শিক্ষক শাহিনুজ্জামান এর আগেও এ ধরণের কাজ করেছেন।
ওই বিদ্যালয়ে সেসব বিষয়ে স্থানীয়ভাবে শালীসের মাধ্যমে শাহিনুজ্জামানকে জরিমানা করে মাফ করে দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহম্মেদ যখন তাফালবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন তখন তার বিরুদ্ধে নানা ধরণের কথা প্রচলিত ছিল। শিক্ষক শাহিনুজ্জামান বলেন ওই ছাত্রী নাম দিতে আসলে আমি বলি তোমার নাম দলীয় নৃত্যে দেওয়া হয়েছে। আজকে শুধু পবিত্র কোরান ও গীতা পাঠের বাছাই হবে। তুমি সহ যারা অন্য অন্য বিষয়ে নাম দিয়েছ তারা পরবর্তীতে স্কুলে আসবা।
এ সময় বিভিন্ন ক্লাসের বহু শিক্ষার্থীরা উপাস্থিত ছিল। কি কারনে আমাদের নামে তার মা অভিযোগ করেছেন তা জানিনা। প্রধান শিক্ষক মোঃ সুলতান আহম্মেদ বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। বরং ওর অসুস্থতার খবর শুনে আমি হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ছিলাম।
এছাড়া এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক ওই ছাত্রীর সাথে খারাপ আচারন করে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে । শরনখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস কে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। অভিযোগের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।