যশোরের শার্শার রামপুর গ্রামের নিজ শ্বশুরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে শার্শা থানায় একটি নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন এক সন্তানের জননী ভুক্তভোগী পুত্রবধূ।
এমন অভিযোগ দেওয়ায় পুত্র ও পুত্রবধূকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন অভিযুক্ত শ্বশুর রফিকুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে সুদখোর রফিকুল।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যাই অভিযুক্ত সুদখোর রফিকুল এর আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এলাকাবাসী এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান এর কাছ থেকে জানা যায়।
এলাকাবাসী অভিযুক্ত বিত্তবান রফিকুলের ভয়ে মুখ খুলতে পারে না। সে রামপুর গ্রামের কদর উদ্দীন বিশ্বাসের পুত্র।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,সুদখোর রফিকুল তার সুদের ব্যবসাতে অল্পদিনে কোটিপতি বনে গিয়েছে। অবৈধভাবে আয় করা কোটি টাকার বনিয়াদে সে যা ইচ্ছা তাই করে। তার নামে নারীঘটিত কেলেঙ্কারি শেষ নেই। এমনিতেই দুইটা বউ নিয়ে সংসার করে। এবার তার কু নজর পড়লো নিজের ছেলের বউয়ের দিকে! এলাকাবাসী এমন নিকৃষ্ট লজ্জাজনক কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারছে না। এলাকাজুড়ে ধিক্কার জানাচ্ছে আর তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।
শ্লীলতাহানি হওয়াতে শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এক সন্তানের জননী বলেন, বিয়ের পরপরই লম্পট শ্বশুর আমার দিকে তার কু নজর দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার সাথে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতে লাগে। আমি লজ্জায় কারোর সাথে কিছু বলতে পারি না।একদিন হঠাৎ করে আমার লম্পট শ্বশুর আমার হাত টেনে ধরে আর কু-প্রস্তাব দেয়। তখন আমি সহ্য না করতে পেরে আমার স্বামীর সাথে সব ঘটনা খুলে বলি। কিন্তু অভিযোগ স্বামীর জন্মদাতা লম্পট বাবার বিরুদ্ধে ছিলো বলে সে আমার শাশুড়িদের সাথে বলতে বলে। তাদের সাথে বলার পর হিতের বিপরীত হয়। শাশুড়িরাই তখন আমার ওপর নির্যাতন শুরু করে। সম্প্রতি আমার লম্পট শ্বশুর আমাকে আপত্তিকর কথা বলে। আর বিভিন্ন প্রলোভন দেখাতে থাকে। আমাকে কু-প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হওয়ায়, লম্পটটা আমার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং জোর করে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায়। আমি কোনোরকম প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসি। পরবর্তিতে আমি আর আমার স্বামী স্থানীয়ভাবে বিচার দিয়ে আসি।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এক পয়ার্যে আমাদের বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়। এখন আমি স্বামী সন্তান নিয়ে পথে পথে ঘুরছি। আমি তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ের সুদখোর রফিকুলের ছেলে অভিযোগ করে বলেন,আমার বাবার চরিত্রগত সমস্যা আছে। আমার বাবা এর আগেও অনেক বার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার স্ত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য স্থানীভাবে বিচার দিলে সেখানে সে হাজির না হয়ে তার পক্ষ থেকে তার ভাই সাবেক মেম্বার বাদশাকে পাঠায়। পরে স্থানীয় শালিসি বিচারের রায় প্রত্যাখ্যান করে। এবং আমাকে ত্যাজ্যপুত্র করার ও মৃত্যুর হুমকি প্রদান করে।
এ বিষয়ে উলাশী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আয়নাল হক বলেন, ঘটনাটি পারিবারিক সমস্যা বলে সুষ্ঠভাবে সমাধান করে দেওয়ার জন্য উক্ত ওয়ার্ডের মেম্বার কবির হোসেনকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। পরে শুনলাম শালিসি বৈঠকের রায় অভিযুক্ত সুদখোর রফিকুল প্রত্যাখ্যান করে পালিয়ে গেছে। আসলে সুদখোর রফিকুলের নামে নারীঘটিত কেলেঙ্কারির শেষ নেই। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাটি আমি ভুক্তভোগী মেয়েটির কাছ থেকে শুনেছি। ঘটনাটি আসলেই খুবই লজ্জাজনক আপত্তিকর ঘটনা। তাদের আমি থানা পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
এ বিষয়ে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম বলেন, অভিযুক্ত রফিকুলের বিরুদ্ধে তার পুত্র ও পুত্রবধূ বাদি হয়ে শার্শা থানায় একটি নারী নির্যানত আইনে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।