আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব সুন্দরবন দিবস। বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ২২ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে “বিশ্ব সুন্দরবন দিবস”। আজ সোমবার সকাল ১০ টায় সুন্দরবনের পাদদেশে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম সেন্টারে সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিম এর আয়োজনে ও বারসিক এর সহযোগিতায় মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়।
পৃথিবীর একমাত্র ম্যানগ্রোভ ও বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় যুব উদ্যোগ ও জনসচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। প্রায় অর্ধশতাধিক যুবক-যুবতী সুন্দরবন সুরক্ষার শপথ বাক্য পাঠ করেন।
শপথে তারা বলেন- আমরা যুব, তারুণ্যের শক্তিতে আমরা বলীয়ান বিশ্ব তারুণ্যের অধিকার নিয়ে আজ আমরা শপথ করছি যে, পৃথিবীর সকল প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ, সবুজ জ্বালানি সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখব। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর স্বপ্নময় সবুজ-পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে পৃথিবীর একমাত্র ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন সুরক্ষায় সকলকে সাথে নিয়ে একসাথে এগিয়ে যাব। হে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন, আমরা যেন সকল প্রাণের জন্য মায়ের মতো সুন্দরবনকে সুরক্ষা সহ সবুজ পৃথিবী গড়ার লক্ষে একযোগে কার্যকারিতা ভূমিকা রাখতে পারি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সুন্দরবনকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সুন্দরবনের টিকে থাকার ওপর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বেঁচে থাকা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সমৃদ্ধি বহুলাংশে নির্ভরশীল। এ বনকে ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সকলকে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে বনের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমের আহবায়ক তাপস সরকার, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ উজ জামান সাঈদ, বারসিক শ্যামনগর রিসোর্স সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার মননজয় মন্ডল, এ্যাডভকেসি অফিসার ফজলুল হক, সিডও ইয়ুথ টিমের সদস্য ওসমান গনি সোহাগ, সহ সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্ববৃন্দ ও সদস্যগণ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুগ্ন আহব্বায়ক রাইসুল ইসলাম।
উল্লেখ্য যে, তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালিত হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে- জাতীয় বন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের গুরুত্ব ও ভূমিকা সর্ম্পকে সর্বমহলে ব্যাপক সচেতনতা এবং আগ্রহের সৃষ্টি করা, যাতে এটির সংরক্ষণের কাজ শক্তিশালী হয়।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সংরক্ষণে বনবিভাগ ও বেসরকারি উদ্যোগগুলোকে সহায়তা করা এবং সুন্দরবনের প্রতি নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের ভালোবাসা ও মমত্ববোধ তৈরি করা এবং তাদের চেতনায় সুন্দরবন ভাবনাকে উজ্জীবিত করা। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব চত্তরে সি,ডি,ও ইউথ টিমের আয়োজনে ‘সুন্দরবন দিবস’ উপলক্ষে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।