করোনাক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান সম্পন্ন হয়েছে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তার সিটি স্ক্যান করা হয়। স্ক্যান শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক গণমাধ্যমকে জানান, সিটি স্ক্যানের ফলাফল পরে জানা যাবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাত সোয়া ৯টার দিকে গুলশানের ফিরোজা বাসভবন থেকে গোল্ডেন কালারের একটি প্রাইভেট কারে করে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। ৯টা ৪০ এর পর হাসাপাতালে পৌঁছান তিনি। হাসপাতালে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সব সদস্যরা ছিলেন ।
গত ১০ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনা শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, ‘সব কটি রিপোর্টই হয়েছে, শুধু সিটি স্ক্যানটা করানো হচ্ছিল না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো একসময় সিটি স্ক্যান করিয়ে ফেলব। এ ছাড়া আর সব মোটামুটি ভালো আছে।’
এফ এম সিদ্দিকী বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর কোনো সম্ভাবনা আছে কি না, সে সময় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘যদি মনে করি, দু-তিন দিনের জন্য বা কয়েক দিনের জন্য হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার, আমরা সেটাও করব। এটা নির্ভর করবে সিটি স্ক্যানের রিপোর্টের ওপর।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলেও জানান এই চিকিৎসক। গত শনিবার খালেদা জিয়া পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ওই দিন রাতেই জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
পরদিন রবিবার প্রথমে বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করা না হলেও দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার পজিটিভ রিপোর্ট ভাইরাল হয়। পরে একইদিনে বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল চেয়ারপারসনের করোনা পজিটিভের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
শুরু থেকেই চিকিৎসক এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা চিকিৎসা শুরু করেন। পরে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়া ছাড়াও তার বাসভবনের আট সদস্য করোনাক্রান্ত হয়েছেন।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়।
তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তার সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ সীমিত।