করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী ১৩ জুন দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হবে। প্রায় ১৫ মাস পর বিদ্যালয়ের আঙিনায় পা রাখবে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় খোলার পর জামা-জুতা কিনতে সব শিক্ষার্থীকে ‘কিডস অ্যালাউন্স’ উপহার হিসেবে ১ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
তবে কোনো কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলেও চলতি মাসের মধ্যে এই টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা। গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও উপবৃত্তি প্রকল্প সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের উপবৃত্তির টাকা বিতরণ চলছে। এ টাকা বিতরণ শেষ হওয়ার পর ১০ জুনের পর জামা ও জুতা কেনার জন্য কিডস অ্যালাউন্স বাবদ এক হাজার টাকা করে বিতরণ শুরু হবে। তবে ১৩ জুন যদি স্কুল খোলে তা হলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে এ টাকা পরে ছাড় করা হবে।
এককালীন টাকা বিতরণের জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতর এ খাতের প্রয়োজনের অর্থ ছাড় করেছে। এখন শুধু সময় সুযোগমতো শিক্ষার্থীদের মায়ের নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. ইউসুফ আলী বলেন, এখন ২০২০ সালের শেষ ছয় মাসের উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। এটা শেষ হলেই জামা-জুতা কেনার জন্য এককালীন এক হাজার টাকা করে বিরতণ শুরু হবে। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। ১৩ জুন স্কুল খুললে দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার উপহার হিসেবে এ টাকা দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা জটিলতা এবং অর্থ সংকটের কারণে প্রায় এক বছর পর গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাসের উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। ২০২০ সালে বছরের প্রথম দিন নতুন বইয়ের সঙ্গে জামা-জুতা কেনার জন্য এককালীন এক হাজার দেয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছর অর্থ ছাড়ের জটিলতায় তা বিতরণ সম্ভব হয়নি। আর ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাথীরা স্কুলে না এসে নতুন বই সংগ্রহ করেছে। ফলে এ বছরের প্রথম দিনেও টাকা দেয়া সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, সারাদেশে প্রাথমিক স্কুলে কিউস অ্যালাউন্সের পাওয়ার যোগ্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখের বেশি। এসব শিক্ষার্থীর কিডস অ্যালাউন্স বাবদ প্রায় ১১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া উপবৃত্তির দুই কিস্তির বকেয়া পরিশোধ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালের উপবৃত্তির তিন কিস্তির ও এককালীন কিডস অ্যালাউন্স বাবাদ ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়। এ টাকা থেকে প্রতি কিস্তি (তিন মাস অন্তর) উপবৃত্তি বিতরণ করতে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন। সেই হিসাবে প্রতি বছরে চার কিস্তিতে প্রয়োজন হয় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।