১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে পাকিস্তানের বৈষম্যের শেকল থেকে নিজেদের মুক্ত করে বাংলাদেশ। এদিকে ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতও নিজেদের ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে।
এই দিনকে কেন্দ্র করে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আজ, বিজয় দিবস। আমরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সৈন্যদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ জীবন উৎসর্গ এবং অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে।’
মোদি আরও লিখেছেন, ‘এই দিনটি তাদের অসাধারণ বীরত্ব এবং তাদের অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।’
বাংলাদেশের অনেকেই মনে করছেন, এই পোস্টের মাধ্যমকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বিজয়কে অস্বীকার করেছেন মোদি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত টানাপড়েনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও এই ফেসবুক পোস্টে মোদির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘তীব্র প্রতিবাদ করছি। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ছিল বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। ভারত ছিল এই বিজয়ের মিত্র, এর বেশি কিছু নয়।’ পোস্টের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সেই পোস্টকে যুক্ত করেছেন তিনি।
এছাড়া মোদির সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সে প্রতিবাদী মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশিরা। ওমর ফারুক নামে এক বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা বাংলাদেশের বিজয় দিবস, ভারতের নয়।’
তানভিরুল ইসলাম নামের অপর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এটা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধটা হয়েছিল যেন পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হতে পারে। কিন্তু মোদি এটাকে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের যুদ্ধ এবং অর্জন হিসেবের উল্লেখ করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে পুরোপুরি অস্বীকার করা হচ্ছে।’
ওসমান গনি নামে একজন লিখেছেন, ‘এটা আমাদের (বাংলাদেশের) বিজয়। আপনি কীভাবে বলছেন এটা ভারতের জয়? মোদি বাড়াবাড়ি করছেন। এই পোস্টের জন্য আপনার বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ।’
মোদির সে পোস্টে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি রিঅ্যাকশন এসেছে, যার মধ্যে ৮৭ হাজারই হাসির।