করোনা মহামারির কারণে গত বছর এসএসসি ও সমমান শিক্ষার্থীদের ভাগ্যে অটোপাসের সুযোগ মিললেও এবার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিয়েই পাস করতে হবে। তবে কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে তা নিয়ে চলছে পর্যালোচনা। এই পর্যালোচনায় চারটি বিষয় সামনে রেখে এগোনো হচ্ছে। প্রথমত- অনলাইনে, দ্বিতীয়ত- দুটি বিষয়কে এক করে সশরীরে, তৃতীয়- বিভাগভিত্তিক গুরুত্বপর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষা এবং চতুর্থ- পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বেশকিছু প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে বাস্তবসম্মত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সর্বশেষ প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করবে মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হতে পারে। একইসঙ্গে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে সমন্বয়ক করে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) কমিটির সদস্যরা এসএসসির পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া যেতে পারে সেজন্য ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন। কমিটির সদস্যরা পর্যালোচনা করে একাধিক বাস্তবসম্মত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। মন্ত্রণালয় থেকে যে প্রস্তাব চূড়ান্ত করবে সেটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
কমিটির সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন বলেন, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে না এলে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। আর যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তখন কেন্দ্র বাড়িয়ে সাজেক্ট কমিয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। এই মুহূর্তে চারটি বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে অনলাইন, দুটি বিষয়কে এক করে সশরীরে, বিভাগভিত্তিক গুরুত্বপর্ণ বিষয়গুলো ও পরীক্ষা কেন্দ্র বৃদ্ধি করে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির সময়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট স্থাপের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে করোনা সংক্রমণের পিকটাইম চলছে। সশরীরে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার চেয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট স্থাপন, শিক্ষার্থীদের হাতে ডিভাইস পৌঁছে দেয়া, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সুপারিশ করা হবে।
বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় দ্বিতীয় পত্র একত্রি করে একটি পরীক্ষা নেয়া হবে। বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর পরীক্ষা নিতে বলা হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের এ সময় এসএসসি পরীক্ষা কিভাবে নেওয়ায় যায় সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, সারা দেশে প্রায় ২৩ লাখ এসএসসি শিক্ষার্থী। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করছে। এসব শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, এবার এসএসসি শিক্ষার্থীদের অটোপাসের সুযোগ নেই। পরীক্ষা নেওয়া হবে। এখন সেই পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হবে সেটি চূড়ান্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রস্তাব দিলে পরবর্তীতে চূড়ান্ত করা হবে।