চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ও এর পরিচালক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার প্রতিবেদন দাখিলে তাগিদের আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে এ আবেদন করেন মামলার বাদী মৃত নাসরিন আক্তারের স্বামী এসএ আলম সবুজ।
আবেদনে তিনি বলেন, মামলাটি আজ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বহুবার তাগিদ দেওয়ার পরও ধার্য তারিখে তারা কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য বাদীর অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল একান্ত প্রয়োজন।
আদালত আগামী ২৫ জানুয়ারি আবেদনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। একইদিনে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গত সেপ্টেম্বর মাসে এ ঘটনা ঘটলেও গত ১৭ ডিসেম্বর আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। এরপর ২২ ডিসেম্বর মামলাটি পিবিআইয়ের পরিদর্শক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে আগামী ২১ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ও ডা. জাফরুল্লাহ ছাড়াও আসামি করা হয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাসরিন, ডা. শওকত আলী আরমান ও গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেলোয়ার হোসেন এবং সেবিকা শংকরী রানী সরকারকে।
আইনজীবী রোকেয়া খাতুন জানান, ঘটনার পর ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ও ধানমন্ডি থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু তিন মাসেও এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪(ক)/৩৪ ধারায় পরস্পর যোগসাজশে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত সেপ্টেম্বরে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করলেও সেখানে চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে ঘটনাটি আপস করার কথা বলা হয়। ডা. জাফরুল্লাহ নিজেও ঘটনাটি আপস করার কথা বলেন। এরপর দফায় দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা হলেও আপস হয়নি।
বাদী অভিযোগ করেছেন, শেষ পর্যন্ত গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ঘটনাটি আপস না করলে তিনি ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করতে যান। থানা থেকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিলে আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়।