চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ অর্থ এবং সুখ একেবারে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। বেশি অর্থ উপার্জন ব্যাপক সুখের সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয়, অর্থ আসলেই সুখ কিনতে পারে।’ যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল সোশ্যাল সার্ভের (জিএসএস) ১৯৭২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪৪ হাজারের বেশি মানুষের ওপর জরিপ চালানোর পর নতুন এক গবেষণার ফলে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চালিয়ে আসা এ গবেষণার ফল সুখের বিস্তৃত শ্রেণি বিভাজন শিরোনামে গত সপ্তাহে ইমোশন সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা যায়, ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সের মানুষের আয় এবং সুখের পারস্পরিক সম্পর্ক বছরের পর বছর দৃঢ়ভাবে বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যেসব গবেষণা পরিচালনা করা হয়; জিএসএসের এ গবেষণা সেসবের একটি। ১৯৭২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়ে দেশটির ৪৪ হাজার ১৯৮ জন পূর্ণ-বয়স্কের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
গবেষণায় সুখের ক্রমবর্ধমান শ্রেণি বিভাজন দেখতে পান গবেষকরা। এতে দেখা যায়, কলেজ পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পারেন নাই; এমন শেতাঙ্গদের সুখ ১৯৭২ সালে যেরকম ছিল পরে তা ব্যাপক পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে কলেজের শিক্ষা যাদের আছে তাদের সুখ স্থির রয়েছে।
আফ্রিকান এবং আমেরিকানদের ক্ষেত্রে সুখ বিভাজনের এ গবেষণার ফলে ভিন্নতা দেখা গেছে। তবুও অর্থের সঙ্গে সুখের পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতিফলন রয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, কলেজ শিক্ষা নেই এমন কৃষ্ণাঙ্গদের সুখের মাত্রা ১৯৭২ সাল থেকে স্থির রয়েছে। অন্যদিকে কলেজ শিক্ষা পেয়েছেন এমন কৃষ্ণাঙ্গদের সুখ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শিক্ষার মাধ্যমে সুখ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে বলে মনে করেন জরিপে অংশগ্রহণকারী শেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গরা।
অর্থ সুখ কিনতে পারে না বলে যে প্রবচন রয়েছে- এই গবেষণা সেটিকে চ্যালেঞ্জ করেছে; যা অন্যান্য গবেষণাও সমর্থন করে। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, ৭৫ হাজার ডলারের বেশি উপার্জন বৃদ্ধি পেলেও তা ব্যাপক সুখের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
তবে জেনারেল সোস্যাল সার্ভের জরিপে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে, প্রিন্সটনের গবেষণার সঙ্গে সেই প্রশ্নের ভিন্নতা রয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জিএসএস জানতে চায়, সবকিছু মিলে আপনি এখনকার বিষয়গুলোকে কীভাবে বর্ণনা করবেন? আপনি কি বলতে পারেন যে, আপনি খুবই সুখী, যথেষ্ঠ সুখী অথবা বেশি সুখী নন। এসব প্রশ্নের উত্তর গত কয়েক দশক ধরে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের উপার্জনের ভিত্তিতে নিয়েছে জেএসএস।
গবেষণার প্রধান লেখক জিন টোয়েঞ্জ মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, আগের দশকের চেয়ে বর্তমানে সুখের সঙ্গে উপার্জনের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, আকাশচুম্বী রিয়েল স্টেট ব্যবসা, শিক্ষা ব্যয় বহন না করতে পারাই নিম্ন-আয়ের মানুষের সুখ কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট।