অনলাইন ডেস্কঃ খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় তাকে আদালত হাজির করেননি কারা-কর্তৃপক্ষ। ফেরত আসা কাস্টোডিতে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, খালেদা জিয়া আজ অসুস্থ। তাই তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১.৩৬ মিনিট এ আদালত শুরু হয় এবং শেষ হয় ১১.৫০ মিনিটে। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৭ এপ্রিল।
এদিন মামলার শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালত বলেন, আজকে মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। কিন্তু খালেদা জিয়া আদালতে কারা-কর্তৃপক্ষ উপস্থিত করেননি৷
তিনি বলেন, আইন অনুসারে সকল আসামির উপস্থিতি ছাড়া চার্জ শুনানি হয়নি। তারপরে খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য আসামি পক্ষের শুনানি করে মামলাটি এগিয়ে নেওয়া যায়। অন্যান্য আসামির পক্ষের চার্জ করতে পারেন। ইতোপূর্বে নজির আছে আসামির উপস্থিত ছাড়ায় চার্জ শুনানির হয়েছে।
এরপরে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে উপস্থিত করেননি। কারণ তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ধার্য তারিখে আদালত নেওয়ার পড়ে যাওয়ার মত হয়েছিল সেটা আপনাকে অবহিত করলাম। উনি এটায় অসুস্থ যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আর আইন অনুযায়ী আসামি অনুপস্থিত চার্জ করা যায়।
উভয় পক্ষের শুনানির বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ওদিন খালেদা জিয়া আদালতে বসা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
চলতি গত মাসের ৭ তারিখে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল চার্জ গঠন শুনানি করেন। শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৫ (২) ধারায় এবং দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করার আবেদন জানান।
জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত এ মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিটের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্ন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চ আদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।
গত ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো, এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম এর মৃত্যুর পর এই মামলায় বর্তমান আসামির সংখ্যা ১৭ জন।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন।