ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক নির্দেশনা এলেও দেশের উভয় শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত রয়েছে। এ অস্বাভাবিক দর পতনের পেছনে কোনো মৌলিক কারণ নেই বলে মনে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং ডিবিএ’র পক্ষে সভাপতি মো. শরীফ আনোয়ার হোসেনসহ সংগঠনটির নেতারা।
শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারে উত্থান ও পতন একটি স্বাভাবিক আচরণ। এ উত্থান ও পতনে কমিশনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তবে উত্থান ও পতন আইন-কানুন অনুযায়ী হচ্ছে কি না বা কোনো ধরনের কারসাজি রয়েছে কি না সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখা কমিশনের দায়িত্ব। এ বিষয়ে সার্ভিল্যান্সের তথ্য অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ চলছে।
তিনি আরো বলেন, ডিবিএর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেয়ারবাজার পতনের কোনো মৌলিক কারণ পাওয়া যায়নি। তবে ডিবিএ দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে। প্রথমত সাধারণ বিনিয়োগকারীরা না জেনে ও বুঝে শেয়ার বিক্রি করছে। বড় বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার থাকে লাখ লাখ। তাদের একটি অংশ বিক্রি করলে তাদের পাশাপাশি ছোট বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছে, যা শেয়ারবাজারের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তাই একজন বিক্রি শুরু করলেই অন্যজন যেন বিক্রি না করে এবং নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করে সেই বিষয়ে ডিলার, বোকারেজ হাউজ ও বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিএ সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, শেয়ারবাজারের সার্বিক বিষয়ে আলোচানার জন্য আমাদের ডাকা হয়েছিল। বর্তমান বাজারের যে মন্দা তার পেছনে কী কারণ তা অনুসন্ধানে সার্ভিল্যান্স সিস্টেম জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমান কমিশনের ওপর আস্থা রেখেই বিনিয়োগকারীরা বাজারে এসেছে। এখন তাদেরই এই আস্থা ধরে রাখার বিষয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করব।
এদিকে বৈঠকের সূত্র জানা গেছে, রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা নির্দেশনা ইতিবাচক বলে মনে করেছে বিএসইসি ও ডিবিএ। এছাড়া কমিশন মনে করছে ডিবিএ’র কার্যকারিতা আরো বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে বিও হিসাবধারীদের সঙ্গে বোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য করতে হবে ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে ঋণ আদায়ের সক্ষমতা। ঋণ ফেরত পাওয়ার সক্ষমতা অনুযায়ী ঋণ দিতে হবে। এছাড়া যিনি ঋণ নেবেন তিনি ঋণ ফেরতের বিষয়ে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী ঋণ নেবেন। এ বিষয়ে বোকারেজ হাউজ ও বিও হিসাবধারীর মধ্যে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে।