হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে থাকা প্রতিটি করোনা রোগীর জন্য সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা। আর একজন সাধারণ রোগীর জন্য ব্যয় হচ্ছে ১৫ হাজার টাকা।
আজ মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় মহাখালীর বিসিপিএস প্রাঙ্গণে ‘ভ্যাকসিন ইস্যু ও সমসাময়িক নানা বিষয়াদি’ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় করোনা রোগীর জন্য আড়াই হাজার বেড ছিল। এখন সাত হাজার বেড আছে। এটা আমরা রাতারাতি করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, প্রতিটি হাসপাতালেই করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। টিবি হাসপাতাল, গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটেও করোনা চিকিৎসা হচ্ছে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ৪০ লাখ টিকা কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকা আসে দেশে। এরপর প্রতি মাসে আসার কথা ছিল ৫০ লাখ করে।
কিন্তু মার্চে ২০ লাখ টিকা পাঠায় সিরাম। এরপর আর কোনো টিকা আসেনি। তবে ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩২ লাখ টিকা।
সিরামের লোকাল এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মা বলেছে, তারা এক কোটি ৪০ লাখ টিকা পেতে সিরামকে টাকা দিয়েছে। সিরাম ৫০ লাখ টিকা বাংলাদেশকে দিতে প্রস্তুত রেখেছে। কিন্তু ভারত সরকার অনুমোদন দিচ্ছে না। এখন সরকার যেন ভারতকে চাপ দেয়।
টিকা না পাওয়ায় করোনার প্রথম ডোজের টিকা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কেবল আগে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় জোডের টিকা দেয়া হচ্ছে।
আবার চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলছে সরকার। এরই মধ্যে রাশিয়া উদ্ভাবিত স্পুৎনিক ফাইভ অনুমোদন দিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করেছে। এটি অনুমোদন হয়ে যাবে যেকোনো সময়।
পাশাপাশি চীনের একটি উদ্যোগেও শামিল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চীনসহ ছয় দেশের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে দুপুরে।
এই বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে করা সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিন কোটি টিকার জন্য টাকা নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা সঠিক সময়ে টিকা পাচ্ছি না। এ জন্য আমরা যোগাযোগ করছি।
‘কিছুই দিনের মধ্যে হয়তো আসবে। এখনই তারিখ বলতে পারছি না। টিকা পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে যাবে।’
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ২১ লাখ টিকা আসবে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই সিরাম থেকে ২০ লাখ টিকা আসবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা টিকা পেতে কেবল সিরামের সঙ্গেই যোগাযোগ করছি না। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে। আশা করা যায়, টিকার কোনো সংকট হবে না।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি রাশিয়ার টিকা ব্যবহারের জন্য অনুমোদনের যে সুপারিশ করেছে সেটি নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়া ও চীনের টিকা এ ছাড়া আরও যে সংস্থা অনুমোদনের আবেদন করেছে, তাদের বিষয়েও সরকার সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে। রাশিয়ারিটি এরই মধ্যে অনুমোদনের সুপরিশ করেছে। বাকিগুলোও ধীরে ধীরে হয়ে যাবে।’
সরকার বারবার তাগাদা দিয়ে এলেও স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনীহার কারণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এসেছে বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে ভুল করেছি সেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী চলতে চাই। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সমাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে করতে হবে।’