সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা শনিবার , ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজ ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস | চ্যানেল খুলনা

আজ ৭ ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস

১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় মাগুরা। মাগুরা জেলা প্রশাসনসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

২রা মার্চ মাগুরা শহরের চৌরঙ্গীর মোড়ে তৎকালীন কোর্ট চত্বরের সামনে বটতলায় মহাকুমা প্রশাসক ওয়ালিউর ইসলাম বিপ্লবী বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্য মাগুরার মানুষের মাঝে ব্যাপক অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে।

এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে মুন্সি রেজাউল হককে মাগুরা মহাকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি করে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ দুটি পরিষদ গঠনের পর থেকে তারা ঢাকার ঘোষণা অনুযায়ী মাগুরাতেও ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেন।৩ মার্চ মাগুরায় সফল হরতাল পালিত হয়। সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান অন্যতম দুই উপদেষ্টা সৈয়দ আতর আলী ও অ্যাড. সোহরাব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গেরিলা তৎপরতা চালাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন আলতাফ হোসেন, অ্যাড. আবুল খায়ের, চেয়ারম্যান আকবর হোসেন, নবুয়ত মোল্যা, রোস্তম আলী, আবু নাসের বাবলু, নন্দ দুলাল বংশী প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করলেও সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ২৬ মার্চ মাগুরার প্রবেশপথ গুলোতে নানারকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মাধ্যমে এক কঠিন প্রতিরোধ ব্যুহ গড়ে তোলে।

পাশাপাশি তারা স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় অর্থ ও অস্ত্র এবং সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে। ২৬ মার্চ চুয়াডাঙ্গা ইপিআর এর ৪নং উইং কমান্ডার মেজর ওসমান বিদ্রোহ ঘোষণা করে এক প্লাটুন সদস্য ও অস্ত্রসহ মাগুরার সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে যোগ দিতে আসেন। যা পরবর্তীতে ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রণেচ্ছুক ছাত্র জনতাকে সংগঠিত করে নোমানী ময়দান, পারনান্দুয়ালী শেখপাড়া আমবাগান, ওয়াপদা, সদর উপজেলার কাটাখালি ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়। হাবিলদার শাহজাহান, কামরুজ্জামান (শৈলকুপা), আব্দুল মান্নান প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ এপ্রিল তাজউদ্দিন আহমেদ ও ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম মাগুরা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। ওই দিন রাতে সংগ্রাম পরিষদ তাদের মাগুরা থেকে ভারতের পথে এগিয়ে দিয়ে আসে। ওই দিনই মাগুরা যশোর সড়কের লেবুতলায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সুবেদার আব্দুল মুকিতের নেতৃত্বে মাগুরা সংগ্রাম পরিষদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। যা ৭ এপ্রিল পর্যন্ত দফায় দফায় চলতে থাকে। এ যুদ্ধে শহরের পারনান্দুয়ালী গ্রামের শরিফুল ইসলাম ফুলসহ ১৫ জন শহীদ হন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ গ্রহণের পর অ্যাড. আসাদুজ্জামান রানাঘাটে ক্যাম্প ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ভারতে যান। মাগুরা সংগ্রাম পরিষদ বিশাল প্রতিরোধ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখলেও ২২ এপ্রিল দুপুরে পাক বাহিনী বিশাল ট্যাংক বহর নিয়ে ঝিনাইদহ-যশোর শহর দিয়ে মাগুরা সীমানায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। এদিন মাগুরার আলমখালী বাজার এলাকায় সুরেন বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে পাক সেনারা গুলি করে হত্যা করে। পরদিন ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার জয়বাংলা স্লোগান দেওয়ায় পাকিস্তানি বাহিনী বাগবাড়িয়া গ্রামের লালু নামে এক পাগলকে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে হানাদাররা শহরের পিটিআই, ভিটিআই, সিও অফিস (বর্তমান উপজেলা পরিষদ চত্বর), মাগুরা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, নিউ কোর্ট বিল্ডিং, মাইক্রো ওয়েভ স্টেশন ও মাগুরা সরকারি কলেজে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। শহরের মধুমতি ডাকবাংলোটিকে তারা হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। হানাদার বাহিনী স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধীদের চিহ্নিত করে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠন করে তাদের যোগসাজশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞসহ বর্বর হামলা ও নির্মম হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকে।পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর হায়াৎ এবং মাগুরা আল বদর বাহিনীর প্রধান কসাই হিসেবে পরিচিত মাগুরার রিজু, কবির ও আইয়ুব চৌধুরীসহ আরো অনেক রাজাকার ও আলবদরদের সেই সময়কার পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ও বিভীষিকার কথা মাগুরার মানুষের মনে এখনও জ্বলজ্বল করে।

মাগুরা শ্রীপুরের আকবর বাহিনী, মহম্মদপুরের ইয়াকুব বাহিনী, মহম্মদপুর ফরিদপুর অঞ্চলের মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কমল বাহিনী, মাগুরা শহরের খন্দকার মাজেদ বাহিনী এবং মুজিব বাহিনী বিশেষ সাহসী ভূমিকা নিয়ে পাকিস্তানি সেনা ও স্থানীয় রাজাকার আল বদর বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাণপণ যুদ্ধ করে। কমল বাহিনীর প্রধান মাশরুরুল হক সিদ্দিকী কোমল ভাটিয়াপাড়ায় এক সম্মুখ যুদ্ধে গুলিতে তার একটি চোখ হারান। শ্রীপুর বাহিনীর রণাঙ্গনে একের পর এক বীরোচিত অভিযান পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে তটস্থ করে তোলে। শ্রীপুরের শ্রীকোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আকবর হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এ বাহিনী মূলত মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ফরিদপুর এলাকাজুড়ে তৎপরতা চালায়। এ বাহিনীর অব্যাহত অভিযান ও স্থানীয় গেরিলা বাহিনীর তৎপরতায় পাক বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। এ দুই বাহিনী ৬ ডিসেম্বর মাগুরাকে হানাদার মুক্ত করতে নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ও বিভিন্ন পাকিস্তানি ক্যাম্পে আক্রমণ চালায়। একই সাথে মিত্রবাহিনীর আগ্রাসনের ভয়ে পাকিস্তানি সেনারা রাতারাতি মাগুরা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরদিন ৭ ডিসেম্বর মাগুরা শত্রুমুক্ত হয়। হানাদারমুক্ত হওয়ার আনন্দে মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামে সারা শহরে। জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মাগুরার আকাশ বাতাস।

৭ই ডিসেম্বর মাগুরা মুক্ত দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন উপলক্ষে মাগুরা জেলা প্রশাসনসহ মুক্তিযোদা সংসদ, জেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে।

https://channelkhulna.tv/

মাগুরা আরও সংবাদ

মাগুরায় ভোট দিয়ে শতভাগ বিজয়ের আসা করলেন সাকিব আল হাসান

মাগুরায় আপন দুই ভাইকে গলা কেটে হত্যা

মাগুরায় থিয়েটার ইউনিটের পথনাটক “মৃত্যুঘূর্ণি” প্রদর্শন

মাগুরার সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামানের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাকিব- আল হাসান

মাগুরায় টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ. ‘টুটুল আহবায়ক, মিথুন সদস্য সচিব’

বন্ধ হলো সওদাগর কুরিয়ারের শাখা অফিস

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।