চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামিদের সঙ্গে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির মুঠোফোনে কথোপকথনের তথ্য হাজির করা হয়েছে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলামের কাছে। বুধবার (১৭ জুলাই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিন্নিকে রিমান্ডে নিতে আদালতের কাছে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন। আদালত যখন এ বিষয়ে মিন্নির কাছে জানতে চান, তখন নীরব ছিলেন তিনি। এছাড়া, শুনানিতে মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবীও ছিলেন না।
আদালতে উপস্থিত রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি সনজিব দাস সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার ১২ নং আসামি হৃদয়ের জবানবন্দি আদালতে পেশ করেন। হৃদয় তার জবানবন্দিতে জানিয়েছিল, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় মিন্নি জড়িত রয়েছেন। এছাড়াও ঘটনার আগে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে মিন্নির কথোকথনের বিস্তারিত ফোন কলের তথ্য আদালতে হাজির করা হয়। আদালত এসব বিষয়ে মিন্নির কাছে জানতে চান তখন চুপ ছিলেন মিন্নি। তবে তিনি বলেন, আমি আমার স্বামী রিফাত হত্যার বিচার চাই।
পুলিশ মিন্নির সাত দিনের রিমান্ড দাবি করলেও আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে কৌসুলি সনজিব দাস। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আইনজীবীদের কেউ আসামিদের পক্ষে নিয়োগ না হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে মিন্নির পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এদিন আদালত চত্ত্বরে ছিল বিশেষ নিরাপত্তা। দুপুর ২টার দিকে মিন্নিকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও প্রায় ১ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় আদালত ও আশপাশের সড়কগুলোতে যান ও জনসাধারণ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মিন্নিকে আদালত থেকে বের করে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) তার স্ত্রী মিন্নির সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল লোক। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নয়ন বন্ডসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন রিফাতের বাবা। মামলায় প্রধান সাক্ষী মিন্নি।
রিফাতকে আক্রমণকারীদের একজন ছিলেন নয়ন বন্ড। পুলিশ তাকে আটকও করেছিল। পরে বন্দুকযুদ্ধে নয়ন বন্ডের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ১৩ জুলাই রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ সংবাদ সম্মেলনে জানান, সিসিটিভি ফুটেজে পুত্রবধূ মিন্নির গতবিধি সন্দেহজনক। পরবর্তীতে সেই হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে চাইলেও বিষয়টি তার কাছে পরিকল্পিত বলে মনে হয়। তিনি মিন্নিকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান।