সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা মঙ্গলবার , ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আধু‌নিকতার ছোঁয়ায় সংকটের মুখে রূপসার মৃৎ শিল্প পা‌শে দাঁড়া‌নোর আশ্বাস ইউএনও নাস‌রি‌নের | চ্যানেল খুলনা

আধু‌নিকতার ছোঁয়ায় সংকটের মুখে রূপসার মৃৎ শিল্প পা‌শে দাঁড়া‌নোর আশ্বাস ইউএনও নাস‌রি‌নের

তরিকুল ইসলামঃ বাঙ্গালীর শত বছরেরর পুরনো ঐতিহ্য মৃৎ শিল্প। প্রাচীনকাল থেকে বংশনুক্রমে গড়ে ওঠা রূপসা
উপ‌জেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প আধু‌নিকতার ছোঁয়ায় ক্রমেই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সংকটের মুখে পড়া রূপসার মৃৎ শিল্পের উন্নয়‌নে পাশে দাঁড়া‌নোর আশ্বাস দি‌য়ে‌ছেন নব্য যোগদানকৃত উপ‌জেলা নির্বাহী অ‌ফিসার নাস‌রিন আক্তার। আর পাল‌দের যুগোপ‌যোগী প্র‌শিক্ষ‌ণ দি‌য়ে প‌ণ্যে আধু‌নিকত্ব আনা ও বাজারজাতকরণের নতুন আইডিয়া সৃ‌ষ্টির মাধ্য‌মে এ ঐ‌তিহ্য রক্ষা করা যে‌তে পা‌রে ব‌লে অ‌ভিমত সুধীজন‌দের।
স‌রেজ‌মিন খোঁজ নি‌য়ে জানা যায়, “মৃৎশিল্প” শব্দটি “মৃৎ” এবং “শিল্প” এই দুই শব্দের মিলত রূপ। “মৃৎ” শব্দের অর্থ মৃত্তিকা বা মাটি আর “শিল্প” বলতে এখানে সুন্দর ও সৃষ্টিশীল বস্তুকে বোঝানো হয়েছে। এজন্য মাটি দিয়ে তৈরি সব শিল্প কর্মকেই মৃৎ শিল্প বলা হয়। আর
যারা মা‌টি দি‌য়ে বি‌ভিন্ন জি‌নিসপত্র তৈ‌রি ক‌রে পেশায় তাদের কুমার বা পাল ব‌লে। আধু‌নিকতার ছোঁয়ায় এ্যালুমিনিয়াম, স্টীল, মেলাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধিতে বিলুপ্তির পথে পরিবেশ বান্ধব এই মৃৎ শিল্প। একসময় রূপসা উপজেলার অনেক স্থানে মাটি দ্বারা জিনিসপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্ভর কর‌তো অ‌নে‌কেই। চা‌হিদা ক‌মে যাওয়ায় পিতৃপুরুষের আদি পেশা ছেড়ে অনেকেই বেছে নিয়েছে ভিন্ন পেশা। হাতে গোনা কিছু সংখ্যক কারিগর এ পেশায় নিয়োজিত থাকলেও অসচ্ছলতা তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে সরকারি পৃষ্টপোষকতার অভাবে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও এখানকার মাটির তৈরি ফুলের টবসহ অন্যান্য সামগ্রী বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার শ্রীরামপুর, ভবানীপুর, পিঠাভোগ আমদাবাদ এলাকার পালদের হাতে গড়া কারুকাজে
সমৃদ্ধ নানা ধরনের সামগ্রীর এক সময় নাম-ডাক ছিলো বিভিন্ন এলাকায়। বছরের প্রায় ১২ মাস এসব এলাকায় হাড়ি, বাসন, কড়াই, কলসি, মাইট, থালা, চাড়ি, রসের ঠিলা, ঘট, ধুনোচি, ঘরের চালের টালি, পাত কুয়ার পাট বা পাত, দধির মালসাসহ মাটির নানা ধরণের
সামগ্রী তৈরি হতো এসব এলাকায়। বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা এখানে নৌকা ভিড়িয়ে তাদের পছন্দের সামগ্রী কিনে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতেন। সেই পালপাড়ার পালদের অনেকেই এখন হতাশায় জীবন পার করছে।ক্রেতাদের মালামাল ক্রয়ের তাগিদ নাই। তবুও কিছু সংখ্যক পাল পিতৃপুরুষের এ পেশা আঁকড়ে ধরে আছেন।

উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত গিরিস চন্দ্র পালের ছেলে শিবুপদ পাল বলেন, একাজে যে খাটনি দিতি হয়, মাল বেচলি সেই হিসেবে মজুরি ওঠেনা। তাই নাম মাত্র এ পেশায় জড়ায়ে আছি।
আমদাবাদ পাল পাড়ার প্রবীণ ধীরেন পাল বলেন, মাটির কলসের পানি কত ঠান্ডা। এ পানিতি কোন ক্ষতি নেই। অথচ আমরা ফ্রিজির ঠান্ডা পানি খাইয়ে কত রকম রোগ টাইনে আনতিছি। আর মাইটে হাড়ির রান্না ভাত একদিন পরেও মানুষ খাতি পারিছে। আর এহন এবেলার রান্না ভাত ওবেলায় নষ্ট হয়ে যায়। অলোক পাল বলেন, ভাগ্যের উন্নয়নে সমিতির মাধ্যমে কুমিল্লায় সরকারি প্রশিক্ষণ নি‌য়ে কারখানা ক‌রে‌ছি। আমাগে চিন্তা ছেলো এই কারখানার মাধ্যমে ফুলির টবসহ আধুনিক মডেলের সরঞ্জাম বানাবো। বিদেশে মাল নিয়ার জন্যি আমাগে কাছে বায়ারও আইছে। কিন্তু মাল বানানোর জায়গা কম থাহায় আমরা অডার নিতি সাহস পাইনি। সরকারিভাবে আমাইগে দিক আর একটু ভালো কইরে তাকালি মাটির বানানো জিনিষ আমরা বিদেশে রপ্তানি করতি পারতাম।
একই গ্রামের গোপাল চন্দ্র পাল বলেন, এ গ্রামে এহনো আমরা ৪৬ পরিবার এই কাজের সাথে জড়ায়ে আছি। পরিবারের নারী-পুরুষ মিলে ৪ জনে খাটা-খাটনি কইরে শুধু দই‌য়ের মালসা বানা‌য়ি মাসে ৮/১০ হাজার টাকা আয় ক‌রি।
রূপসা প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি তরুণ চক্রবর্তী বিষ্ণু ও সা‌বেক সভাপ‌তি এসএম মাহবুবুর রহমানসহ আ‌রো অ‌নে‌কের মাধ্য‌মে জানা যায়, এক সময় মৃৎ শিল্প রূপসার ঐ‌তিহ্য ছিল। বর্তমা‌নে গু‌টি ক‌য়েক প‌রিবার কোন রক‌মে পূর্ব পুরুষ‌দের পেশা টি‌কি‌য়ে রে‌খে‌ছে। এখানকার মাটির তৈরি ফুলের টবসহ অন্যান্য সামগ্রী বিদেশে রপ্তানীর ব্যবস্থা কর‌তে পার‌লে পুনরায় ঘু‌রে দাঁড়া‌তে পার‌বে ব‌লে তাঁরা ম‌নে ক‌রেন। যু‌গোপ‌যোগী প্র‌শিক্ষ‌নের মাধ্য‌মে প‌ণ্যে আধু‌নিকত্ব আন‌ারও দাবী ক‌রেন সুধী মহল।
এ ব্যাপা‌রে উপ‌জেলা নির্বাহী অ‌ফিসার নাস‌রিন আক্তার ব‌লেন, পাল পাড়ায় যে মৃৎশিল্পের কারখানা আছে তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে জমি ভরাটের জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। পরবর্তীতে প্রোজেক্ট করে তাদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করার প‌রিকল্পনা র‌য়ে‌ছে যেন তারা উন্নত মা‌নের পণ্য তৈ‌রি ক‌রে বি‌দেশে রফতা‌নি সহ দে‌শে বাজারজাতকর‌নের নতুন দিক উ‌ন্মোচন কর‌তে পা‌রে।

https://channelkhulna.tv/

খুলনার ইতিহাস ঐতিহ্য আরও সংবাদ

খুলনা বেতারের সূচনালগ্নে স্বর্ণোজ্জ্বল দিনগুলি

আধু‌নিকতার ছোঁয়ায় সংকটের মুখে রূপসার মৃৎ শিল্প পা‌শে দাঁড়া‌নোর আশ্বাস ইউএনও নাস‌রি‌নের

সুন্দরবনের সঙ্কটাপন্ন এলাকায় মধ্যে ৫টি সিমেন্ট কারখানার অনুমোদন

খুলনায় প্রতিনিধি সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদঃবিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে সুন্দরবন বাদ দেয়ায় আগেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করতে হবে

আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

দুই মাস মাছ ধরায় বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞা সুন্দরবনে

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।