চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছয় মাসের উপবৃত্তি ও জামা-জুতা-ব্যাগের টাকা গত জুনে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত ও তথ্য সংগ্রহ না হওয়ায় এটি সম্ভব হয়নি। ইদ-উল-আজহার আগেও এ অর্থ দেওয়া সম্ভব হবে না। যদিও গত মে মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বাবদ ৬৪৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ছাড় দেওয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত জুনের মাঝামাঝিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর শিশুদের মায়ের মোবাইল অ্যাকাউন্টে এ অর্থ পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল সে মাসেই। কিন্তু এখনও কেন এ টাকা দেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘এখনও শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হাতে আসেনি। তাই টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তবে অর্থ অনুমোদন হয়ে গেছে। আশা করছি, আগস্টে দেওয়া যাবে।’
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের চলতি বছরের উপবৃত্তির ছয় মাসের টাকা, জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার জন্য অর্থ দেয়ার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইদ-উল-ফিতরের আগে গত বছরের তিন মাসের বকেয়া উপবৃত্তির টাকা শিশুদের পরিবারকে দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ছয় মাসের উপবৃত্তি বাবদ ৯০০ টাকা ও শিক্ষাসামগ্রী কিনতে ১ হাজার টাকাসহ মোট ১,৯০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও করোনা সংকটের কারণে প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে না পারা, সার্ভিস প্রোভাইডার শিওর ক্যাশের সঙ্গে নতুন চুক্তিসহ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে ঘোষণা অনুসারে ইদ-উল-আজহার আগে শিশুদের পরিবারকে এ অর্থ দেওয়া সম্ভব হবে না।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যেই আগের উপবৃত্তি প্রকল্প থেকে গত বছরের বকেয়া তিন মাসের (অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর) টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। শিওর ক্যাসের মাধ্যমে প্রথম তিন মাসের উপবৃত্তির বকেয়া ২৯১ কোটি টাকা সাড়ে ৯১ লাখ প্রাথমিকের শিক্ষার্থীকে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কোরবানির ইদের আগে শিশুদের চলতি বছরের ছয় মাসের উপবৃত্তির অর্থ ও শিশুদের পোশাক-আশাক কেনার টাকাও একবারে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব না হওয়ায় পিছিয়ে গেছে। কারণ, এখন নতুন প্রকল্প। টাকার ব্যবস্থা ছাড়াও আনুষঙ্গিক অনেক কাজ বাকি ছিল, যাদের মাধ্যমে টাকাটা দেব, সেই সার্ভিস প্রোভাইডারের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প চালু করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে ২০০৮ সালে ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’ গ্রহণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের মেয়াদ ২০১৫ সালের ৩০ জুন শেষ হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ পর্যায়ে প্রথমে এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়া হয়। পরবর্তীতে এর সঙ্গে আরও ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে যুক্ত করা হয়। প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলে আরও দুই বছর সময় বাড়ানো হয়েছিল। এবার সংশোধনীতে মেয়াদ আরও বাড়িয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়।