চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃযশোর শহরের বিমান অফিস মোড় এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বোনসহ তিনজন নিহত হন। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রেহেনা আক্তারের দুই মেয়ে তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা (৩০) ও ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা (২৫)।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে ইয়াশা ও পিয়াসাদের বাড়ি যশোর শহরের ঢাকারোড বারান্দিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিরাজ করছে শোকাবহ পরিবেশ। খাটের ওপরে রেহেনা আক্তার হিরাকে ঘিরে থাকা স্বজনরাও অশ্রুসিক্ত। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও স্বজনদের নেই! অশ্রুসিক্ত স্বজনরা একে অপরকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় খাটের ওপর শুয়ে বিলাপ করছেন ইয়াশা ও পিয়াসার মা রেহেনা আক্তার হিরা।
দুই মেয়েকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা রেহেনা আক্তার হিরা। তিনি বিলাপ করছেন, ‘ও আল্লাহ, তুমি আমারে কেন রেখে গেলে। আমাকে মা ডাকার তো আর কেউ থাকল না। তুমি আমারে কেন নিলে না!’
স্বজনরা জানান, তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা যশোর আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলেন। গত ১৩ জানুয়ারি তার চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয় ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই। ২৩ জানুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিক বউভাতের অনুষ্ঠান ধার্য করা হয়েছিল।
শুক্রবার রাতে বউভাতের দাওয়াত দিতে এবং শহরে ঘুরতে বেরিয়ে ছিলেন তারা। প্রাইভেট কারে ছিলেন দুই বোন তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা, ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা ও তাদের খালাতো ভাই মনজুর হোসেনের স্ত্রী তিথী (৩৫), তিথীর মেয়ে মানিজুর মাশিয়াব (৪), তাদের আত্মীয় হৃদয় (২৫) ও শাহিন (৩৫)। গাড়ি চালাচ্ছিলেন ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (৩২)।
নিহতদের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে বর শফিকুল ইসলাম জ্যোতি নিজেই গাড়ি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মীয়দের বাড়ি দাওয়াত দিতে বের হন। রাত ১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বিমান অফিস মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেট কারটি রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে একটি দেয়াল বিধ্বস্ত করে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ইয়াশা, পিয়াসা ও তিথী নিহত এবং বাকি চারজন আহত হন।