আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরণের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হচ্ছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এবং বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের মির্জা। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড সূত্র বিষয়টি ভোরের পাতাকে নিশ্চিত করেছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিষয়টি নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যও দিয়েছেন। গণভবনের বিশস্ত সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ দেড় মাস ধরেই নোয়াখালীর জেলা রাজনীতির নোংরামি কারণে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড যথেষ্ট বিরক্ত এবং বিব্রত। দলের মধ্যে এ ধরণের বিভেদ সৃষ্টি করে রাখার কোনো সুযোগ নেই বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য।
আলাপকালে তিনি বলেন, একজন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আপন ছোট ভাই, আরেকজন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য, তিনিও সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ। তাদের কারণে আওয়ামী লীগের মতো ঐতিহ্যবাহী দলকে বিতর্কিত হওয়ার আর সুযোগ দেয়ার উপায় নেই। এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে একরাম চৌধুরী এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে কাদের মির্জাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তা প্রকাশ করা হবে। কেননা, এখনই তাদের লাঘাম টেনে ধরা না হলে আওয়ামী লীগের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না বলেও মনে করেন দলটির প্রভাবশালী এ প্রেসিডিয়াম সদস্য। যদিও ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থার প্রশ্নে চূড়ান্তভাবে একজন জয়ী মানুষ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে নোয়খালীর রাজনীতিতে তিনি সরাসরি হস্তক্ষেপ করেও নিজের ভাই ও একরাম চৌধুরীকে থামাতে না পারার ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন না বলেও মনে করে আওয়ামী লীগেরই একটি বৃহৎ অংশ।
বুধবার ( ২৪ ফেব্রুয়ারি )এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যে যার মতো বক্তব্য দিয়ে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে কেউ জড়িত থাকলে, যত বড়ই নেতা হোক, কেই পার পাবে না। তিনি আরো বলেন, কে, কোথায়, কখন কী করছেন সবই নজরদারিতে আছে। শিগগিরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির পরবর্তী সভায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুটি কয়েক লোক বদনাম করলে, দল তার বোঝা নিবে না। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে, দলে যে কোন পর্যায়ে শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ অপরিহার্য নয়।