পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম মতিউর রহমানের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় হামলাকারীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারী গাড়ি ভাঙচুর করেছে। সোমবার রাত ৮ টার দিকে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কের মা কম্পিউটারের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার বিষয়ে অ্যাডভোকেট এম মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাত ৮ টার দিকে তিনি গাড়িতে করে উপজেলা থেকে বের হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ছেলের অসুস্থতার খোঁজখবর নিতে পিরোজপুর সদর হসপিটালের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় উপজেলা সড়কে স্থানীয় সজিব হাওলাদার সহ অপরিচিত কয়েকজন তার গাড়ির গতিরোধ করতে হাত তোলে। তিনি গাড়ি থামালে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিশ হজার টাকা নিয়েছেন এই কথা বলে তর্ক শুরু করে সজিব গাড়ির গ্লাসের ফাঁকা থেকে জামার কলার ধরে তাকে গাড়ি থেকে টেনে বাইরে নামানোর চেষ্টা করেন এবং কয়েকটি কিল ঘুষি মারেন। এসময় সজিব গাড়ির সামনের ডান পাশের গ্লাসে আঘাত করে গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেন।
পড়ে অবস্থা খারাপ দেখে গাড়ির ড্রাইভার দ্রুত গাড়ি টান দিয়ে উপজেলা মোড়ের দিকে চলে আসেন। তবে হামলাকারী সজিবের সাথে তার রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত কোন বিরোধ নেই বলেও জানান তিনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে এ হামলা চালানো হয়েছে এবং প্রাননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তার। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
এদিকে এ হামলার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে ধারণা করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা। এটি কোন বিশেষ মহলের ইন্দোনে হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
রাতে এ খবর জানাজানি হলে উপজেলা জুড়ে আ. লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে ও গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ইন্দুরকানী বাজারে ও উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপজেলা আ.লীগ। এ সময় হামলাকারী ও তাদের মদদ দাতাদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে হামলাকারী সজীব হাওলাদারের সঙ্গে থাকা উত্তম কুমার বলেন,আমি কয়েক মাস আগে সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানকে ২০ হাজার টাকা দেই। ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় সজীব হাওলাদারকে নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচারণ করেন। এসময় সজীবের সঙ্গে চেয়ারম্যানের মারামারির ঘটনা ঘটে।
তবে উক্ত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও সাজানো বলে দাবি করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি উত্তম কুমার নামে কাউকে চেনেন না বলেও জানান।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস জানান, ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম মতিউর রহমান কে হত্যার উদ্দিশ্যে হামলা করা হয়েছে। তার ব্যবহৃত সরকারী গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লুৎফুন্নেসা খানম জানান, একজন নির্বাচিত জন প্রতিনিধির উপর এ ধরনের হামলা ও সরকারী গাড়ি ভাংচুরের মতে ঘটনা নিন্দনীয়। থানার অফিসার ইন চার্জ(ওসি) কে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) এনামুল কবির জানান, হামলার ঘটনা শুনে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ হামলার কারন কি তা জানার চেষ্টা করছি। তবে হামলার ঘটনায় এখনো লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি।