করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে ইসরাইল। তাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশকেই ইতোমধ্যে অন্তত প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে গেছে।
সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এখন অপেক্ষা করছেন, এই দেশটি থেকে কী উপাত্ত পাওয়া যায়। কারণ তা হলেই বোঝা যাবে, একটি দেশের পুরো জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়ার পর তা প্রাণঘাতী দমনে কতটা কার্যকর হলো। খবর বিবিসির।
ঘটনা হলো– টিকা দেওয়ার পরও হাজার হাজার লোক করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছেন বলে টেস্টে দেখা গেছে।
ইসরাইলের কোভিড মোকাবেলার কর্মসূচির সমন্বয়কারী অধ্যাপক ন্যাশম্যান অ্যাশ বলেছেন, ফাইজারের টিকার একটি মাত্র ডোজ হয়তো ততটা কার্যকর নয়, যতটা আগে ভাবা হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ হওয়া লোকের সংখ্যা এখনও কমে আসতে দেখছি না। তার এ কথার পর সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ।
ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অধ্যাপক এ্যাশের বক্তব্যকে ‘নির্ভুল নয়’ বলে আখ্যায়িত করে বলেছে, টিকার কি প্রভাব পড়ল তার পূর্ণ রূপ শিগগিরই দেখা যাবে।
টিকা নেওয়ার পর মানবদেহ করোনাভাইরাসের জেনেটিক উপাদানগুলো চিনে নিতে এবং অ্যান্টিবডি ও টি-সেল তৈরি করতে বেশ খানিকটা সময় নেয়।
তার পরই এগুলো ভাইরাসের দেহকোষে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বা আক্রান্ত কোষগুলোকে মেরে ফেলতে শুরু করে।
টিকার পুরো কার্যকারিতা তৈরি হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ বা সম্ভবত আরও বেশি সময় লাগে বলে জানিয়েছেন ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ইমিউনোলজিস্ট অধ্যাপক ড্যানি অল্টম্যান।
ইসরাইলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তারা অনেকেই টিকার প্রথম ডোজটি নিয়েছেন।
কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে টিকা কার্যকরী হয়নি।
ইসরাইলের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ক্ল্যালিট এ প্রশ্নের জবাব পেতে চার লাখ লোকের মেডিক্যাল রেকর্ড পরীক্ষা করেছে।
এর মধ্যে দুই লাখ হলেন টিকা নিয়েছেন– এমন ষাটোর্ধ্ব বয়সের মানুষ। আর বাকি দুই লাখ হচ্ছেন এমন ষাটোর্ধ্ব মানুষ যারা টিকা নেননি।
প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর– দুই সপ্তাহ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, দুগ্রুপেই করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়া লোকের অনুপাত মোটামুটি সমান।
কিন্তু তার পর থেকে টিকা নিয়েছেন এমন লোকদের মধ্যে নতুন করে ভাইরাস সংক্রমণের পরিমাণ ৩৩ শতাংশ কমে যেতে দেখা যায়।
ক্ল্যালিটের কর্মকর্তা র্যান বালিশার বলছেন, এটি হচ্ছে প্রথম পর্যায়ের সুরক্ষা এবং এখনই সংক্রমণ ৩৩ শতাংশ কমতে দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, টিকার ফলে করোনাভাইরাসে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সংখ্যা কমে আসছে কিনা- তা এ সপ্তাহ শেষের দিকে বোঝা যাবে।